যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
‘একমাত্র ঈশ্বর আদেশ দিলে আমি সরবো’, সাক্ষাৎকারে বাইডেন
গত ২৮ জুন নিজের পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বিতর্কে বিপর্যয়কর ফলাফলের পর থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর। তবে বাইডেন জানিয়েছেন, এসব চাপকে তিনি গ্রাহ্য করছেন না এবং একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আদেশ দিলেই তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।
শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিটি নিউজকে একটি ‘আনস্ক্রিপটেড’ সাক্ষাৎকার দেন বাইডেন। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়— ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর থেকে তার রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির বেশ কয়েক জন সদস্য মনেপ্রাণে চাইছেন যে বাইডেন যেন আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। এ প্রসঙ্গে তার সিদ্ধান্ত বা প্রতিক্রিয়া কী?
বিজ্ঞাপন
উত্তরে বাইডেন বলেন, “যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার সামনে এসে আমাকে (প্রার্থিতা প্রত্যাহারের) আদেশ দেন, তাহলে আমি তা করতে পারি।”
গতকাল শুক্রবার নিজের শহর উইসকনসিনে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভোটারদের একটি মিছিল-সমাবেশে যোগ দেন বাইডেন। সে সময়ই কর্মসূচির অবসরে এবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
সাক্ষাৎকারটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ, সম্পূর্ণ আলোচনা হয়েছে আনস্ক্রিপটেড প্রশ্নভিত্তিক। কোনো সাক্ষাৎকারে যেসব প্রশ্ন করা হবে, সেসব যখন সাক্ষাৎকার গ্রহণের আগে লিখিত আকারে সাক্ষাৎকারদাতাকে প্রদান করা হয়, তখন সেটিকে বলা হয় ‘স্ক্রিপটেড’ সাক্ষাৎকার। শুক্রবার এবিসি রেডিওকে যে সাক্ষাৎকার বাইডেনের দিয়েছেন, সেটির কোনো প্রশ্ন আগে থেকে বাইডেনকে সরবরাহ করা হয়নি। তাই এটি ছিল ‘আনস্ক্রিপটেড’ সাক্ষাৎকার।
ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্ক বিপর্যয়ের পর থেকে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন, তাতে এবিসির এই সাক্ষাৎকারটিকে ৮১ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের জন্য ‘বড় পরীক্ষা’ বলে উল্লেখ করেছেন অনেকেই।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের আয়োজনে গত ২৮ জুন প্রথমবারের মতো নির্বাচনী বিতর্ক হয় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেনের মধ্যে। বিতর্কে দেশের অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী আগমণ ইস্যুতে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প; কিন্তু স্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসপূর্ণ যুক্তি দিয়ে সেসব সমালোচনা খণ্ডন করতে অনেকাংশে ব্যর্থ হন বাইডেন। তাকে বেশ ক্লান্তও দেখা যাচ্ছিল সে সময়।
বিতর্কের পর তাৎক্ষণিক এক জরিপে জানা গেছে, বিতর্ক অনুষ্ঠানটি দেখেছেন— এমন দর্শকদের মধ্যে ৬৭ শতাংশেই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখতে চান।
কী কারণে সেদিনের বিতর্কে এমন বিপর্যয় ঘটল— এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, “তেমন বড় কোনো কারণ নেই। আমি ক্লান্ত ছিলাম। প্রস্তুতিতে খানিকটা ঘাটতি ছিল….আসলে ওটা ছিল একটা বাজে রাত। আমি শুধু একটা বাজে রাত কাটিয়েছি। কেন এমন হলো আমি জানি না।”
“তবে (বিতর্কের সময়) শারীরিকভাবে খুব দুর্বল বোধ করছিলাম। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছি কি না— এমন আশঙ্কাও হয়েছিল। এমনকি অনুষ্ঠান শেষে আমি করোনা টেস্টও করিয়েছি।”
২২ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এবিসি নিউজের জেষ্ঠ্য সাংবাদিক এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যতম উপদেষ্টা জর্জ রবার্ট স্টেফানোপৌল। সাক্ষাৎকারের গোটা ভিডিও কোনো প্রকার কর্তন- সম্পাদনা (কাট, এডিট) ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে স্টেফানোফোল্ড প্রশ্ন করেন, আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে পারবেন— এমন কোনো নেতা এই মুহূর্তে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে রয়েছেন বলে তিনি মনে করেন কি না।
উত্তরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘না। আমি মনে করি না।’
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ