হামাসের সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ক আলোচনা ফের শুরু করতে রাজি হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে তিনি চান, এবারের আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ, মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য নয়।

নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্য। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাকে জানিয়েছেন, তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা ফের শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ লক্ষ্যে একটি নতুন প্রতিনিধি দল গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।’

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন যে নেতানিয়াহু চাইছেন—এবারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন মোসাদের কর্মকর্তারা।

এদিকে, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন নেতানিয়াহু। সেই বৈঠকে হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পুর্নবিবেচনা করা যায় কি না— সে সংক্রান্ত আলোচনাও হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসর। কাতারের মাধ্যমে গত মার্চ মাসে ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল হামাস।

সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এই জিম্মিদের ধরে এনেছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী এই রাজনৈতিক গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা।

শুরুর দিকে অবশ্য হামাসের প্রস্তাবকে পাত্তা দিতে চাননি নেতানিয়াহু। তিনি বলেছিলেন, গাজায় অভিযানরত ইসরায়েলি বাহিনীর মূল লক্ষ্য হামাসকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা এবং এই প্রস্তাব সেই লক্ষেল সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তবে সম্প্রতি হামাসের সেই প্রস্তাব নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন নেতানিয়াহু। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে এই মুহূর্তে নেতানিয়াহুর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জের নাম হিজবুল্লা। লেবাননভিত্তিক এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে সম্প্রতি তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর।

কারণ হিজবুল্লাহর সঙ্গে যদি ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তাহলে সেই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর গাজায় অভিযানরত ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এখন এত বড় একটি যুদ্ধ চালানোর মতো সক্ষমতা নেই।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ