গত ২৮ জুন পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর থেকে নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর তোপের মুখে থাকা বাইডেন আজ শুক্রবার এবিসি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেবেন। বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি, তাতে এই সাক্ষাৎকারকে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টের জন্য ‘বড় পরীক্ষা’ বলে মনে করছেন অনেক মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষক।

শুক্রবার নিজের শহর উইসকনসিনে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভোটারদের একটি মিছিল-সমাবেশে যোগ দেবেন বাইডেন। সে সময়ই কর্মসূচির অবসরে এবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা রয়েছে তার।

এই সাক্ষাৎকারটি বাইডেনের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে যে কারণে, তা হলো— পুরো সাক্ষাৎকারটিই হবে আনস্ক্রিপটেড প্রশ্নভিত্তিক। কোনো সাক্ষাৎকারে যেসব প্রশ্ন করা হবে, সেসব যখন সাক্ষাৎকার গ্রহণের আগে লিখিত আকারে সাক্ষাৎকারদাতাকে প্রদান করা হয়, তখন সেটিকে বলা হয় ‘স্ক্রিপটেড’ সাক্ষাৎকার। এবিসি রেডিওকে যে সাক্ষাৎকার বাইডেনের দেওয়ার কথা, সেটির কোনো প্রশ্ন আগে থেকে বাইডেনকে সরবরাহ করা হয়নি। তাই এটি হবে ‘আনস্ক্রিপটেড’ সাক্ষাৎকার। এই কারণেই এটিকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের জন্য ‘বড় পরীক্ষা’ বলে মনে করছেন অনেক রাজনীতি বিশ্লেষক।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের আয়োজনে গত ২৮ জুন প্রথমবারের মতো নির্বাচনী বিতর্ক হয় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেনের মধ্যে। বিতর্কে দেশের অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী আগমণ ইস্যুতে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প; কিন্তু স্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসপূর্ণ যুক্তি দিয়ে সেসব সমালোচনা খণ্ডন করতে অনেকাংশে ব্যর্থ হন বাইডেন। বিতর্কের পর তাৎক্ষণিক এক জরিপে জানা গেছে, বিতর্ক অনুষ্ঠানটি দেখেছেন— এমন দর্শকদের মধ্যে ৬৭ শতাংশেই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখতে চান।

এদিকে বিতর্কের পর থেকে নিজের রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরেও ব্যাপক চাপে রয়েছেন বাইডেন। দলের অনেক প্রভাবশালী সদস্য প্রকাশ্যে না বললেও অপ্রকাশ্যে নানা ফোরামে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির কয়েকজন বড় ডোনারও জানিয়েছেন, যেহেতু বাইডেনের বয়স হয়েছে এবং তার জয়ের সম্ভাবনা কম, তাই তার উচিত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়া। যদি তিনি তা না করেন, তাহলে তারা ডেমোক্রেটিক পার্টিকে অর্থ সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দেবেন।

তবে বাইডেন বলেছেন ঘুমের অভাব ও বিমান ভ্রমণজনিত ক্লান্তির (জেটল্যাগ) কারণে বিতর্কে তার পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছিল। তিনি আরও বলেছেন, যে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই এবং তিনি কোনোভাবেই নির্বচান থেকে সরবেন না।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হোয়াইট হাউসের দক্ষিণ লনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে দর্শকসারির মধ্যে থেকে হঠাৎ একজন চিৎকার করে বাইডেনের উদ্দেশে চিৎকার করে বলেন, ‘জনাব প্রেসিডেন্ট, লড়াই জারি রাখুন।’

সঙ্গে সঙ্গেই মাইক্রোফন হাতে তার উত্তর দেন বাইডেন। দর্শক সারির উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে বলেন, ‘আপনি আমার মনে কথা ধরতে পেরেছেন, বন্ধু। আমি পিছু হটছি না।’

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ