লেবার পার্টির প্রেসিডেন্ট কেয়ার স্টারমার

সাম্প্রতিক সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন জরিপের বরাতে অনেক আগে থেকেই আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল যে ২০২৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পেতে যাচ্ছে কেয়ার স্টারমার নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল লেবার পার্টি; কিন্তু সেই ‘বড় জয়’ যে আসলে কত বড়— তা বোঝা যাচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরুর পর।

২০১০ সালের নির্বাচনে এই লেবার পার্টিকে পরাজিত করে ক্ষমতায় এসেছিল কনজারভেটিভ পার্টি। তারপর আরও দু’দফা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মোট ১৪ বছর ক্ষমতায় ছিল দলটি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই ১৪ বছরের অধিকাংশ সময় অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে যুক্তরাজ্যের জনগণকে। অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল, ব্রেক্সিট, করোনা মহামারি, ব্যাপক মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন সংকট ও দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে।

ফলে স্বাভাবিকভাবেই কনজারভেটিভ পার্টির প্রতি হতাশ ব্রিটেনের জনগণের উল্লেখযোগ্য অংশ। সেই হতাশার পরিমাণ কতখানি, তা অনুমান করা যাবে সাম্প্রতিক একটি জরিপের ফলাফল দেখলে। সেই ফলাফল বলছে, এবারের নির্বাচনে পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সের মোট ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৪৮৪টিতে জয়ী হবে লেবার পার্টি। জরিপের ফলাফল যদি সত্য হয়, তাহলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য হাউস অব কমন্সের দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি আসন থাকবে লেবার পার্টির দখলে।

ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয় যে লেবার পার্টির প্রতি জনসমর্থন হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। কারণ জরিপের ফলাফল বলছে, ভোটারদের একটি বড় অংশ সরকারের পরিবর্তন চান। এই ভোটারদের মধ্যে লেবার এবং কনজারভেটিভ— উভয় দলের সমর্থকরা রয়েছেন।

ফলে দলীয়ভাবে ভূমিধস জয় পেয়ে লেবার পার্টির প্রধান কেয়ার স্টারমার দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসবেন ঠিকই, কিন্তু তারপর তার সামনের পথ ২০১০ সালের নির্বাচনে জয়ী তৎকালীন কনজারভেটিভ পার্টির মতো মসৃন নয়। এমন কিছু চ্যালেঞ্জ তার জন্য অপেক্ষা করছে, যেগুলোর মুখে পড়তে হয়নি পূর্বসূরী কনজারভেটিভ পার্টির।

এক সময়ের মানবাধিকার আইনজীবী কেয়ার স্টারমার এ ব্যাপারটি জানেন, তবে আপাতত তিনি নির্বাচনের ফলাফলের দিকেই মনযোগ দিচ্ছেন বেশি। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬ টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর এক বিবৃতিতে ভোটারদের উদ্দেশে ৬১ বছর বয়সী স্টার্মার বলেন, ‘আজ ব্রিটেন এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। কনজারভেটিভ পার্টির সরকারের অধীনে আরও ৫ বছর আমাদের থাকা অসম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন পরিবর্তন আর সেই পরিবর্তন আসবে তখনই, যখন আপনারা লেবার পার্টিকে ভোট দেবেন।’

এদিকে, সম্ভাব্য পরাজয় জেনেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষ নেতা ঋষি সুনাক। বৃহস্পতিবার ভোট শুরুর পর এক বিবৃতিতে ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশ এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেসবের সবই তারা (লেবার পার্টি) নিতে প্রস্তুত, যেমনটা গতবার ক্ষমতায় থাকার সময় তারা করেছিল। ব্রিটেনের ভোটারদের প্রতি আহ্বান— এমনটা আপনারা হতে দেবেন না।’

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ