আগামী ৮ ও ৯ জুলাই রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী মস্কো সফরে যাচ্ছেন বলে বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন জানিয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় মস্কো এবং নয়াদিল্লির মধ্যকার সম্পর্ক নানা ধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও ভারত তা উপেক্ষা করেছে। শুধু তাই নয়, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মাঝেই রাশিয়ার কাছ থেকে তেলের ক্রয় বাড়িয়েছে ভারত।

এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন বলেছে, নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ রুশ-ভারত সম্পর্কের আরও উন্নয়নের সম্ভাবনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।

পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়া বিচ্ছিন্ন হলেও মোদিকে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক মিত্র হিসেবে দেখেন পুতিন। তবে ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক জটিল রয়েছে ভারতের।

এর আগে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানে আঞ্চলিক এক শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন ও মোদির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট মোদিকে বলেছিলেন, তিনি বুঝতে পেরেছেন, এই সংঘাত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ‘‘উদ্বেগ’’ তৈরি করেছে এবং এবং মোদি চান ‘‘শিগগিরই’’ সংঘাতের অবসান হোক।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারত বলেছিল, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে সহায়তাকারী হিসেবে ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দেওয়া ভারতীয় কিছু নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার জন্য মস্কোকে চাপ দিচ্ছে নয়াদিল্লি। ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে ওই ভারতীয়দের বাধ্য করা হয়েছে বলেও নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এছাড়া রাশিয়ার কয়েকটি সীমান্ত শহরে আটকা পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল ভারত। একই সঙ্গে নিজ নাগরিকদের ‘‘এই সংঘাত থেকে দূরে থাকার’’ আহ্বান জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

চলমান সংঘাতে কিয়েভের কট্টর সমর্থকের ভূমিকায় দেখা যায়নি নয়াদিল্লিকে। গত মাসে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত শীর্ষ শান্তি সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। ওই বিবৃতিতে যেকোনও ধরনের শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান ছিল।

পশ্চিমা বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর রাশিয়ার তেলের অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা হয়ে উঠেছে ভারত। এমনকি রাশিয়ার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের নিত্যপণ্যও রপ্তানি করে ভারত।

সূত্র: এএফপি।

এসএস