ট্রাম্পের দায়মুক্তি
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘বিপজ্জনক নজির’ বললেন বাইডেন
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আংশিক দায়মুক্তি দিয়ে যে রায় সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, সেটিকে দেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসের ‘বিপজ্জনক নজির’ বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন জনগণের জন্য ‘ক্ষতিকর হয়ে উঠছে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোমবার রায় ঘোষণার পর হোয়াইট হাউসে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় জো বাইডেন বলেন, ‘যে মূলনীতির ওপর এই জাতি প্রতিষ্ঠিত, তা হলো— যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রাজা থাকবে না। আইনের সামনে আমরা প্রত্যেক নাগরিক সমান। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়; এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও নয়।’
বিজ্ঞাপন
‘কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যে রায় ঘোষণা করলেন, তা শুধু এই দেশের বিচার ব্যবস্থার জন্য একটি বিপজ্জনক নজিরই নয়, বরং মার্কিন জনগণের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ দেশের জনগণ আজ থেকে দেখছে যে একজন ব্যক্তি, যিনি ক্যাপিটল হিলে হামলার জন্য নিজের অনুসারীদের পাঠিয়েছিলেন, তিনি দায়মুক্তি ভোগ করছেন। সুপ্রিম কোর্টের উচিত এই রায়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে জবাবদিহি করা।’
আরও পড়ুন
আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২০ সালের নির্বাচনেও তারা প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, তবে সে সময় ট্রাম্প ছিলেন প্রেসিডেন্ট।
২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলায় উসকানি, পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ প্রদান, কর ফাঁকি এবং রাষ্ট্রের গোপন নথি সরানোর অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এছাড়া কর ফাঁকি, সম্পদের তথ্য গোপন ও ২০১৫ সালের নির্বাচনের আগে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ প্রদানের ঘটনায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের জেলা আদালতে ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেসব অভিযোগের বিচারকাজও চলছে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের নেতৃত্বে ৬ জন বিচারপতির একটি বেঞ্চ যে রায় ঘোষণা করেছেন—তাতে বলা হয়েছে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে থাকা অবস্থায় যেসব দাপ্তরিক অপরাধমূলক পদক্ষেপ ট্রাম্প নিয়েছেন, সেসবের ক্ষেত্রে দায়মুক্তি ভোগ করবেন তিনি।
তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে যেসব অপতৎপরতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে, সেসবের জন্য বিচারের মুখোমুখী হতে হবে ট্রাম্পকে। এক্ষেত্রে কোনো সুবিধা তিনি পাবেন না।
এ রায়ের ফলে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতা, ক্যাপিটল হিলে হামলার উসকানি দেওয়া এবং রাষ্ট্রের গোপন তথ্য সরানোর অভিযোগ সংক্রান্ত যেসব মামলার বিচারকাজ বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে চলমান রয়েছে, সেসব এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফের নিম্ন আদালতে চলে যাবে।
এতে এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া একটি দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে পড়বে এবং তা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক হবে ট্রাম্পের জন্য। কারণ আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বচন হবে। সেই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প। যদি নির্বাচনের আগেই এসব মামলার রায় ঘোষিত হতো, তাহলে তা নির্বাচনে ট্রাম্পের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতো।
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ