বেরিলের শঙ্কায় জ্বালানির জন্য লাইন, খাবার-পানি মজুদের হিড়িক
আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট হারিকেন বেরিল ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ ঝড়ে পরিণত হয়েছে আগেই। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে যাওয়া এই হারিকেনকে ক্যাটাগরি-৪ ঝড়ে পরিণত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় বাসিন্দাদের জরুরি প্রস্তুতি নিতে সতর্ক করেছে ক্যারিবিয়ান দেশগুলো। বেরিলের তাণ্ডবের শঙ্কায় ওই অঞ্চলের মানুষ জ্বালানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন। একইসঙ্গে দুর্যোগের প্রস্তুতি হিসেবে খাবার ও পানি মজুদের হিড়িক পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার (৩০ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শক্তিশালী ও মারাত্মক হারিকেন বেরিল ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলো বাসিন্দাদের জরুরি প্রস্তুতি নিতে সতর্ক করছে। সোমবার এই হারিকেন ক্যারিবীয় দ্বীপে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, রোববার ভোর রাত থেকে সোমবার সকালের দিকে হারিকেন বেরিল ক্যারিবীয় অঞ্চলের উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে প্রাণঘাতী বাতাসের গতিবেগ নিয়ে আঘাত হানতে পারে।
পূর্বাভাসদাতারা বলেছেন, হারিকেনটি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ ঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং এটি ক্যাটাগরি ফোর ঝড়ে পরিণত হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। যার অর্থ হারিকেন বেরিলের আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ১৫৫ মাইল বা ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
এছাড়া বেরিলের আঘাতের সময় ক্যারিবীয় দ্বীপগুলোতে জোয়ারের স্তর স্বাভাবিকের তুলনায় ৬ থেকে ১০ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ বার্বাডোস, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা এবং মার্টিনিকের কাছাকাছি এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল এই ঝড়টি আরও শক্তিশালী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
অ্যাকুওয়েদার-এর প্রধান হারিকেন পূর্বাভাসকারী অ্যালেক্স ডাসিলভা সতর্ক করে বলেছেন, অ্যাটান্টিকের এই অংশে মৌসুমের শুরুতে এই ধরনের দ্রুত গতিতে ঝড়ের তীব্রতা দেখতে পাওয়া অনেকটা বিরল। লোয়ার অ্যান্টিলিস জুড়ে বেশ কয়েকটি দ্বীপ জীবন ও সম্পত্তির চরম ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলজুড়ে বহু মানুষ তাদের বাড়িঘরের সুরক্ষার জন্য কাঠের বোর্ড দিয়ে দরজা বা জানালা ঢেকে দিচ্ছেন, অনেকে ফিলিং স্টেশনে জ্বালানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন এবং আবার অনেকে ঝড় ও দুর্যোগের প্রস্তুতি হিসেবে খাবারসহ অন্যান্য পণ্য সরবরাহ এবং পানি মজুদ করছেন।
উল্লেখ্য, গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় আলবার্তোর পর আটলান্টিক মহাসাগরে বেরিলই চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় ঝড়। এর আগে, গত ২০ জুন উত্তর-পূর্ব মেক্সিকোতে আঘাত হানে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় আলবার্তো। সেই ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে দেশটিতে চারজনের প্রাণহানি ঘটে।
টিএম