আদর পুনাওয়ালা

ভারতে সম্প্রতি করোনা টিকার যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা আরো মাস দুয়েক স্থায়ী হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রধান আদর পুনাওয়ালা। সোমবার ভারতের একটি পত্রিকাকে এই তথ্য জানান তিনি।

সাক্ষাৎকারে আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘বর্তমানে আমরা প্রতি মাসে ৭ কোটি ডোজ (করোনা) টিকা উৎপাদন করছি। জুলাই মাসের পর তা বেড়ে ১০ কোটি ডোজে উন্নীত হবে। এর আগ পর্যন্ত টিকার অভাব থাকবে।’

আদর পুনাওয়ালা আরও বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এত দ্রুত চলে আসবে, তা আমাদের ভাবনায় ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম ভারতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তাই অতিরিক্ত টিকা উৎপাদনের নির্দেশ আগে দেওয়া হয়নি।’

ভারতে প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৭ জন, মারা গেছেন ৩ হাজার ৪১৭ জন।

ভারতে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি। তারপর গোটা বছরজুড়ে তাণ্ডব চলার পর নভেম্বর থেকে কমতে শুরু করেছিল সংক্রমণ। গত ফেব্রুয়ারিতে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ ছিল মাত্র ১২-১৫ হাজার।

কিন্তু এই আপাত স্বস্তির অবস্থা ধুয়ে মুছে যাওয়া শুরু করে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ। সে সময় থেকেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ফের বাড়তে শুরু করে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। 

গোটা এপ্রিল জুড়ে ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের রেখচিত্র ছিল তিন-সাড়ে তিন লাখের ঘরে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দৈনিক মৃতের সংখ্যাও।

চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে শুরু হয়েছে গণটিকাদান কার্যক্রম। প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখভাগের করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে টিকা দেওয়া হয়েছে দেশের ৪৫ বছরের চেয়ে অধিক বয়সী প্রবীন নাগরিকদের।

দেশের লাগামহীন করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বর্তমানে গণটিকাদান কর্মসূচির ওপরই জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। চলতি মাস থেকে তৃতীয় ধাপের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্র।

তবে সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকার ঘাটতিও দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। সবচেয়ে বেশি ঘাটতিতে ভুগছে মহারাষ্ট্র ও দিল্লি। ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, টিকার ডোজের অভাবে এই দুই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টিকাকেন্দ্র বর্তমানে বন্ধ আছে।

এসএমডব্লিউ/জেএস