নিয়োগকর্তা ও কর্মীদের অধিকার নিয়ে বিতর্কের জেরে ফিলিপিনোদের ওপর এক বছর ধরে জারি থাকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা অবশেষে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কুয়েত। সোমবার কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের তথ্য জানানো হয়েছে।

কুয়েতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কুনা বিবৃতির বরাত দিয়ে বলেছে, কুয়েত ও ফিলিপিনো কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পর পুনরায় ফিলিপাইন থেকে গৃহকর্মী নিয়োগের কাজ শুরু করার বিষয়ে উভয় দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‌‌উভয় দেশ গৃহকর্মীদের কল্যাণবিষয়ক একটি যৌথ কমিটি গঠনের বিষয়ে রাজি হয়েছে। এই কমিটি সংকট তৈরি করতে পারে, এমন যেকোনো বিষয় মোকাবিলায় নিয়মিত কাজ করবে।

এর আগে, গত বছরের জানুয়ারিতে কুয়েতের মরুভূমিতে ফিলিপিনো গৃহকর্মী জুলেবি রানারার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এই গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের পর ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো কুয়েতে গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধ ঘোষণা করে ফিলিপাইন। ম্যানিলার এমন সিদ্ধান্তের পর দুই দেশের মাঝে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং ভিসা স্থগিতাদেশ দেয় কুয়েত।

ফিলিপাইনের বিপুলসংখ্যক নাগরিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করেন। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১০ শতাংশ আসে রেমিট্যান্স খাত থেকে। ফিলিপাইনের অনেক নাগরিক তেল সমৃদ্ধ উপসাগরীয় রাষ্ট্র কুয়েতের মতো কিছু দেশে স্বল্প মজুরিতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

কুয়েতের ভিসা ব্যবস্থার কারণে একজন গৃহকর্মী চাইলে নিয়োগকর্তা পরিবর্তন করতে পারেন না। যে কারণে অনেক অভিবাসী শ্রমিক নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হন। এমনকি দেশটির নিয়োগকর্তারা গৃহকর্মীদের পাসপোর্টও বাজেয়াপ্ত করতে পারেন।

দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, উপসাগরীয় রাষ্ট্র কুয়েতের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪৭ লাখ; যার ৬ শতাংশই ফিলিপাইনের নাগরিক। এর মধ্যে মাত্র ৩২ শতাংশ কুয়েতের নাগরিক; বাকিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের।

এসএস