ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট বলেছেন, যখন প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ভিভিআইপিদের জন্য একদিনেই রাস্তা ও ফুটপাত খালি করা হয়, তখন অন্য সবার জন্যও কেন তা প্রত্যেকদিন করা যাবে না। পরিষ্কার ফুটপাত এবং হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা পাওয়া প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার। রাজ্য কর্তৃপক্ষ এটা করতে বাধ্য।

সোমবার মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি এম এস সোনাক এবং কমল খাতার ডিভিশন বেঞ্চ ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার এবং অবৈধ বিক্রেতাদের উচ্ছেদের এক আবেদনের শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন।

হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, শহরের ফুটপাতে অবৈধ হকারদের দখল সমস্যা সমাধানের উপায় এবং এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের জন্য রাজ্য কেবল চিরকালই ভাবতে পারে না।

গত বছর মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট নগরীতে অবৈধ ও অবৈধ হকার এবং বিক্রেতাদের উচ্ছেদের বিষয়টি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমলে নিয়েছিলেন। সোমবার হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, তারা জানেন এই সমস্যাটি অনেক বড় এবং রাজ্য, নাগরিক সংস্থাসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কেবল এটাকে ছেড়ে দিতে পারে না। এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বা কিছু ভিভিআইপি এলে রাস্তা এবং ফুটপাত তাৎক্ষণিকভাবে খালি করা হয়... এবং তারা সেখান দিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকে। তখন এটা কীভাবে করা হয়? কেন এটা অন্য সবার জন্য করা যায় না? নাগরিকরা করদাতা... তাদের পরিষ্কার ফুটপাত ও হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’’

‘‘ফুটপাত এবং হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আমরা আমাদের বাচ্চাদের ফুটপাতে হাঁটতে বলি। কিন্তু যদি হাঁটার জন্য কোনও ফুটপাত আর না থাকে, তাহলে আমরা আমাদের বাচ্চাদের কী বলব?’’ প্রশ্ন করেন হাইকোর্ট।

মুম্বাইয়ের বিচারপতি এম এস সোনাক এবং কমল খাতার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছেন, কয়েক বছর ধরে কর্তৃপক্ষ বলে আসছে, তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। রাষ্ট্রকে কঠোরভাবে কিছু করতে হবে। কী করা উচিত আর এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ চিরকাল ভাবতে পারে না। মনে হচ্ছে তাদের ইচ্ছার অভাব আছে। কারণ ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।

বৃহৎ মুম্বাই পৌর ​​কর্পোরেশনের (বিএমসি) জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এস ইউ কামদার বলেছেন, সড়ক এবং ফুটপাতে বসা বিক্রেতা ও হকারদের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু তারা আবার ফিরে আসে। বিএমসি ভূগর্ভস্থ বাজারের বিকল্পও বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আগামী ২২ জুলাই এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেছেন মুম্বাইয়ের আদালত।

সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এসএস