গাজায় আগ্রাসন : এবার মরক্কোতে কোকাকোলা-পেপসি বয়কটের ডাক
টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। প্রাণহানি হয়েছে ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষের। আর এই ইস্যুতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই কোমলপানীয় ব্র্যান্ড কোকাকোলা বয়কটের ডাক দেওয়া হচ্ছে।
আর এবার সেই বয়কটের ডাক ছড়িয়ে পড়ল উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতেও। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশটিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোকাকোলা ও পেপসি ব্র্যান্ডের কোমলপানীয় বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহা এগিয়ে আসার সাথে সাথে মরক্কোর সোশ্যাল মিডিয়াতে কোকা-কোলা এবং পেপসি বয়কট করার ডাক উঠতে শুরু করেছে। গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি এই কোম্পানিগুলোর কথিত সমর্থনের কথা উল্লেখ করে এই ডাক দেওয়া হচ্ছে।
সাধারণত ছুটির সময়কালে কোমল পানীয়ের ব্যবহার বেড়ে যায়। কিন্তু মরোক্কানদের এই আমেরিকান কোমল পানীয় জায়ান্ট থেকে দূরে থাকার জন্য মানুষকে অনুরোধ করছেন অ্যাক্টিভিস্টরা।
মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ বলছে, বয়কট কোকাকোলা (#BoycottCocaCola)-এর মতো হ্যাশট্যাগসহ সোশ্যাল মিডিয়াতে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্টে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, তাদের (কোকাকোলা) পণ্য ক্রয় করে গ্রাহকরা কার্যত ‘তাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের রক্ত পান করছেন।’
কেউ কেউ অবশ্য এসব কোমল পানীয়ের বদলে মরোক্কান পুদিনা চা ব্যবহারের জন্য যুক্তি দিচ্ছেন। তাদের দাবি, কোমল পানীয়ের বিকল্প হিসেবে এই চা ব্যবহার করা হলে তা হবে স্বাস্থ্যকর এবং একইসঙ্গে এটি স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও ভালো হবে। কেউ কেউ অবশ্য কোমল পানীয়ের পরিবর্তে প্রাকৃতিক জুস বা মরক্কোর তৈরি পানীয় বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
যাইহোক, কোকাকোলা এবং পেপসির স্থানীয় কর্মীদের ওপর এই ধরনের বয়কটের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মরোক্কান নাগরিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ কোমল পানীয় সেক্টরে কাজ করে এবং এই পানীয় বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলে তাদের চাকরি হারাতে হতে পারে।
বয়কটের এসব আহ্বান বৃহত্তর ‘বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংকশনস (বিডিএস) আন্দোলনের’ অংশ যা অর্থনৈতিক পন্থায় ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চায়।
মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ বলছে, গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের মধ্যে কোকাকোলাকে বিশেষ করে পশ্চিম তীরের অ্যাটারোটে একটি কারখানা পরিচালনার জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের অধিকৃত এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি রয়েছে যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত।
এর আগে ২০২২ সালে অ্যাক্টিভিস্টদের চাপে আমেরিকান ফুড কোম্পানি জেনারেল মিলস অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অ্যাটারোট ছেড়ে চলে যায়। ফ্রেন্ডস অব আল-আকসা সংস্থা এখন কোকাকোলাকেও সেই ধরনের পদক্ষেপ অনুসরণ করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
আরও পড়ুন
সংস্থাটি বলছে, ‘কোকাকোলা পান করার মাধ্যমে, আমরা ভোক্তা হিসাবে ফিলিস্তিনের অবৈধ দখলদারিত্বের বিষয়ে চোখ বন্ধ করে রাখছি।’
এছাড়া বৈশ্বিকভাবে, কোকাকোলা এবং পেপসি ইতোমধ্যেই একই ধরনের বয়কট প্রচারাভিযানের কারণে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে তাদের অনুভূত অবস্থানের কারণে কিছু দেশে বিক্রি হ্রাস পেয়েছে।
অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কেও কোকাকোলার বিক্রি ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ।
টিএম