চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গিয়ে খুন হয়েছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। তার লাশ এখনও উদ্ধার করা যায়নি।

আজ কলকাতার একটি খাল থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলো আনারের কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর আগে সঞ্জিবা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাংক থেকেও কিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করা হয়েছিল। সেগুলোও আনারের কি না তা এখনো জানা যায়নি।

নেপাল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আনার হত্যার আসামি সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আজ অভিযান চালায় পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। অভিযানের অংশ হিসেবে সেখানকার বাগজোলা খালে নতুন করে তল্লাশি করা হয়। অনেক তল্লাশির পর ওই খাল থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে এসব হাড় নিহত আনারের কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। কলকাতার সংবাদমাধ্যম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রোববার সকালে সিয়ামকে নিয়ে ভাঙড় এলাকায় পৌঁছে বাগজোলা খালে নামেন সিআইডি কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় হাড়গোড়। খালের একটি ঝোঁপের পাশ থেকে হাড়গোড়গুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানানো হয়েছে।

হাড়গুলো দেখে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, সেগুলো মানুষেরই। যদিও তা আনোয়ারুল আজিমেরই কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ জন্য করতে হবে ফরেনসিক পরীক্ষা।

এর আগে নিউটাউনের অভিজাত আবাসিক কমপ্লেক্সের সেপটিক ট্যাংক থেকেও ছোট ছোট কিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করেছিল সিআইডি। সেই মাংস আনোয়ারুলেরই কি না, তা জানতে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে শেষবার কলকাতা শহরতলির এই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল

এবার উদ্ধার হওয়া হাড়গুলোও ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে সিআইডি সূত্রে জানানো হয়েছে। হাড়গুলো যদি সত্যিই বাংলাদেশের এমপির হয় তাহলে সেটা হবে এই মামলায় সিআইডির তদন্তে বড় অগ্রগতি।

অবশ্য হাড়গুলো সত্যিই বাংলাদেশের এমপি আনারের কি না তা ফরেনসিক পরীক্ষায়ও জানা যাবে না। এজন্য প্রয়োজন হবে ডিএনএ প্রোফাইল করার। সেজন্য নমুনা সংগ্রহ করতে হবে আনোয়ারুলের রক্তের সম্পর্কিত কারও কাছ থেকে।

সিআইডি সূত্রে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরো বা হাড়ের ডিএনএ প্রোফাইল করতে আনোয়ারুলের কন্যাকে তলব করা হয়েছে। তিনি এসে নমুনা দেবেন বিশেষজ্ঞদের কাছে।

এর আগে শুক্রবার বাংলাদেশ সীমান্তের কোনো এক জায়গা থেকে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। শনিবার তাকে বারাসত আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তারপর রোববার সকালেই সিয়ামকে নিয়ে কৃষ্ণমাটিতে যান সিআইডি কর্মকর্তারা।

সিআইডি সূত্রে খবর, গত ১৩ মে আনোয়ারুলকে খুনের পরে নিউ টাউনের অভিজাত সেই আবাসিক কমপ্লেক্স থেকে ওই সংসদ সদস্যের মরদেহের অংশ ট্রলি সুটকেসে ভরে কৃষ্ণমাটিতে বাগজোলা খালে ফেলে দিয়েছিল সিয়াম। সঙ্গে ছিল খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জিহাদ হাওলাদার।

জিহাদকে আগেই গ্রেপ্তার করেছিল সিআইডি। খালে মরদেহ ফেলে সিয়াম আবার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক কমপ্লেক্সেই ফিরে এসেছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এরপর গত ১৬ মে বিহার হয়ে নেপালে পালিয়ে যায় সিয়াম।

টিএম