চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে বিজেপি-দলীয় এমপি ও বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌতকে থাপ্পড় মেরে গ্রেপ্তার হওয়া সিআইএসএফের কনস্টেবল কুলিন্দর কৌরের সমর্থনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ভারতে কৃষক আন্দোলন করে আসা একাধিক সংগঠন। আগামী রোববার (৯ জুন) নরেন্দ্র মোদির টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে তারা।

এর আগে, বৃহস্পতিবার ভারতের সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) কুলিন্দর কৌর বিজেপি দলীয় সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য কঙ্গনা রনৌতকে থাপ্পড় মারেন। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পয়েন্ট পার হওয়ার সময় কঙ্গনার গালে কষিয়ে থাপ্পড় মেরে গ্রেপ্তার হয়েছেন ওই কনস্টেবল। ইতোমধ্যে তাকে চাকরি থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কঙ্গনাকে থাপ্পড় মেরে গ্রেপ্তার হওয়া কনস্টেবল কুলিন্দর কৌরের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কৃষক আন্দোলনকারী একাধিক সংগঠন। যাতে তার বিরুদ্ধে অন্যায় পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, সেই দাবিতে কৃষকদের সংগঠনগুলো আগামী ৯ জুন পাঞ্জাবের মোহালিতে ইনসাফ (ন্যায়বিচার) পদযাত্রার পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে বিমানবন্দরে যে ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছে তারা।

সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্যের গালে থাপ্পড় মারার ঘটনায় দেশটির নাগরিকদের মাঝে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কুলিন্দর কৌর বলেছেন, কৃষকদের বিক্ষোভ সম্পর্কে অভিনেত্রীর একটি পুরোনো মন্তব্যে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।‌‌

‘‘কঙ্গনা একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন... কৃষকরা ১০০ রুপির বিনিময়ে বিক্ষোভে বসেছেন। তিনি কী ১০০ রুপির জন্য বিক্ষোভে বসবেন? এই বক্তব্য দেওয়ার সময় আমার মা সেখানে বসে প্রতিবাদ করছিলেন...।’’

ভারতের সিআইএসএফের কনস্টেবল কুলিন্দর কৌর কৃষক পরিবারের সন্তান। কঙ্গনাকে থাপ্পড়ের ঘটনায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলাও করা হয়েছে। দেশটির সদ্য সমাপ্ত ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি আসনে জয় পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কঙ্গনা রনৌত। বৃহস্পতিবার চণ্ডীগড় বিমানবন্দর থেকে দিল্লিতে যাওয়ার সময় হেনস্তার শিকার হন তিনি। কুলিন্দর কৌর বলেছেন, কৃষকদের অসম্মান করায় ওই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তিনি।

দেশটির কৃষক আন্দোলনের অন্যতম প্রধান অরাজনৈতিক সংগঠন সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা (এসকেএম) ও কিষাণ মজদুর মোর্চার মতো বিশিষ্ট কৃষক সংগঠনগুলো শুক্রবার বলেছে, তারা কুলিন্দর কৌরের সমর্থনে তার পাশে দাঁড়িয়েছে।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‌‌এসকেএমের নেতা জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল ও কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারওয়ান সিং পান্ধের এই বিষয়ে সঠিক তদন্তের জন্য পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) গৌরব যাদবের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করছেন।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডাল্লেওয়াল বলেছেন, ‌‌‘‘আমরা পুলিশের মহাপরিদর্শককে এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানাবো। একই সঙ্গে ওই নারী কনস্টেবলের সাথে কোনও অবিচার করলে তা মেনে নেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেব।’’ কনস্টেবল কুলিন্দর কৌরের ঘটনা সঠিকভাবে তদন্তের দাবিতে আগামী ৯ জুন মোহালিতে পুলিশের জ্যেষ্ঠ সুপারিনটেনডেন্টের কার্যালয় অভিমুখে ‌‘‘ইনসাফ পদযাত্রা’’ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

কনস্টেবলের কুলিন্দর কৌরের ভাই শের সিংও একজন কৃষক নেতা। তিনি দেশটির কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন।

এসএস