মোদির মন্ত্রিসভার ‘হেভিওয়েট’ যাদের কপাল পুড়েছে
মন্ত্রিত্ব সামলেছেন, কিন্তু ভোট পাননি! জনগণ এ বার আস্থা রাখেননি তাদের উপর। নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার অন্তত ১৫ জন সদস্য লোকসভা নির্বাচনে হেরে গেছেন। গত মঙ্গলবার ফল প্রকাশের পর ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেছে তাদের ‘মার্কশিট’। সেই তালিকায় রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দু’জন মন্ত্রীও। এমনকি, কেন্দ্রীয় মহিলা এবং শিশু উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও অমেঠী থেকে পরাস্ত হয়েছেন কংগ্রেসের প্রার্থীর কাছে।
স্মৃতি ইরানি
২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের অমেঠীতে চমক দিয়েছিলেন স্মৃতি। ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি রাহুল গান্ধীকে পরাজিত করেছিলেন তিনি। সেখানেই এ বারও ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন কিশোরীলাল শর্মা। ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি।
বিজ্ঞাপন
নিশীথ প্রামাণিক
পশ্চিমবঙ্গ থেকে মোদীর মন্ত্রিসভায় ছিলেন দু’জন প্রতিনিধি। তাদের মধ্যে অন্যতম কোচবিহারের বিদায়ী সংসদ সদস্য নিশীথ প্রামাণিক। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। কিন্তু খোদ অমিত শাহের ডেপুটি হেরে গেছেন তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার কাছে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটে হেরেছেন নিশীথ।
সুভাষ সরকার
নিশীথ ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ছিলেন বাঁকুড়ার বিদায়ী সংসদ সদস্য সুভাষ সরকার। তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর কাছে ৩২ হাজারের বেশি ভোটে হেরেছেন তিনি।
সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি
মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর কেন্দ্র থেকে ৩৩ হাজারের বেশি ভোটে হেরেছেন। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীর কাছে পরাস্ত হয়েছেন তিনি। নিরঞ্জন জ্যোতি সামলেছেন কেন্দ্রীয় ক্রেতাসুরক্ষা, খাদ্য এবং গণবণ্টন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।
কৈলাস চৌধুরী
কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী কৈলাস চৌধুরী রাজস্থানের বাড়মের কেন্দ্র থেকে এ বার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। জয়ীর সঙ্গে প্রায় সাড়ে চার লাখ ভোটের ব্যবধান নিয়ে ওই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন কৈলাস।
অজয় মিশ্র টেনি
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির নাম জড়িয়েছিল ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিকাণ্ডে। সেখানে চার কৃষক এবং এক সাংবাদিককে পিষে মারার ঘটনায় জড়িত একটি গাড়িতে টেনির পুত্র আশিস মিশ্র ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশের এফআইআর এবং চার্জশিটেও তার নাম ছিল। যদিও অভিযোগ বার বার অস্বীকার করেছেন মন্ত্রী স্বয়ং। সেই খেরি কেন্দ্র থেকে এ বারও ভোটে লড়েছিলেন টেনি। তবে তিনি হেরে গিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী উৎকর্ষ বর্মার কাছে। ভোটের ব্যবধান ৩৪ হাজারের বেশি।
অর্জুন মুন্ডা
ঝাড়খণ্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় তফসিলি জনজাতি মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ঝাড়খণ্ডের খুঁটি কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। কংগ্রেসের কালীচরণ মুন্ডার কাছে প্রায় দেড় লক্ষ ভোটে হেরে গিয়েছেন তিনি।
রাজীব চন্দ্রশেখর
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর কেরলের তিরুঅনন্তপুরম থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন শশী তারুর। রাজীব পরাস্ত হয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি ভোটে।
কৌশল কিশোর
কেন্দ্রীয় আবাসন প্রতিমন্ত্রী কৌশল কিশোর উত্তরপ্রদেশের মোহনলালগঞ্জ থেকে পরাস্ত হয়েছেন। তাকে ৭০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী আরকে চৌধুরী।
সঞ্জীব বালিয়ান
মুজফ্ফরনগর থেকে বিজেপির টিকিটে লড়েছিলেন সঞ্জীব বালিয়ান। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী। সমাজবাদী পার্টির হরেন্দ্র সিংহ মালিকের কাছে ২৪ হাজারের বেশি ভোটে হেরেছেন তিনি।
রাওসাহেব দানবে
কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান রাওসাহেব দানবে। তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের জালনা কেন্দ্র থেকে। কংগ্রেসের কল্যাণ বৈজিনাথরাও কলের কাছে হেরে গিয়েছেন তিনি।
আর কে সিংহ
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহও পরাজিত হয়েছেন। বিহারের আরা কেন্দ্র থেকে তিনি সিপিআই (এমএল) প্রার্থী সুদামা প্রসাদের কাছে প্রায় ৬০ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছেন।
ভি মুরলীধরন
কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন কেরলের অট্টিঙ্গল কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। মুরলীধরন রয়েছেন তৃতীয় স্থানে।
এল মুরুগান
কেন্দ্রীয় মৎস্য প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগানও পরাস্ত হয়েছেন। তামিলনাড়ুর নীলগিরি কেন্দ্র থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে হেরে গিয়েছেন তিনি। ওই কেন্দ্রে ডিএমকে প্রার্থী জিতেছেন।
জেডএস