রক্ষণশীল আইন ভেঙে ইসলামের সূতিকাগার সৌদি আরবে খোলা হয়েছে নাইটক্লাব। যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও প্রবেশ করতে পারবেন।

মুসলিম দেশ সৌদির রাজধানী রিয়াদে নাইটক্লাবটি অবস্থিত। ক্লাবটিকে কথিত ‘নতুন জীবন’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিস্ট হাউজ।’

তবে এই ক্লাবটিতে প্রবেশ করতে হলে খরচ করতে হবে বিপুল অর্থ। এছাড়া এই নাইটক্লাবের ভেতর মদপান করা যাবে না।

কী কী আছে ক্লাবটির ভেতর?

নাইটক্লাবটির অভ্যন্তরটির চোখ ধাঁধাঁনো লাইটিং ও দামী জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো। যেখানে আরাম আয়েস করে কাটানো যাবে সময়। বহুতল এ নাইটক্লাবটি সৌদির সংগীত এবং সংস্কৃতির প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই নাইটক্লাবটির ভেতর রয়েছে একাধিক স্টুডিও, ডাইনিং এরিয়া এবং প্রোডাকশন রুম। যেখানে রেকর্ডিংয়ের সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

সৌদির প্রথম নাইটক্লাবের ডান্সফ্লোরে নারী-পুরুষ একসঙ্গে আনন্দ উপভোগ করেন।

ক্লাবটির ভেতর যান ডিজে এবং সংগীত প্রযোজকরা। তারা সেখানে সংগীত পরিবেশন করেন। আর এগুলো উপভোগ করেন সৌদির তরুণরা। যাদের আগে বাড়িতেও পার্টি করার অনুমতি ছিল না।

ক্লাব কর্তৃপক্ষের আশা, এখানে বিদেশি পর্যটকরা আসবেন। কারণ সৌদির অন্য কোথাও তাদের পার্টি করার সুযোগ নেই।

এই ক্লাবটি যে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছে সেটির প্রধান নির্বাহী রমজান আলহারাতানি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজকে বলেছেন, “আমরা দেখছি বিস্ট হাউজ (ক্লাবটি) রিয়াদের সংগীতের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। যেখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিভার নতুনত্বকে লালন ও বেড়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি জানিয়েছেন, তাদের  লক্ষ্য হলো এই অঞ্চলের সংগীতের বিপ্লব ঘটানো।

দামী জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে ক্লাবের অভ্যন্তর।

সৌদির ডিজে তারিক আনতাবি, যাকে আগে ডিজে বাজানোর জন্য বিদেশে যেতে হতো তিনি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে বলেছেন, “এই ক্লাবটি আমার কাছে সবকিছু। অবশেষে আমি নিজ দেশে আমার প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারছি।”

এই ক্লাবটিতে প্রবেশ করতে খরচ করতে হবে অনেক অর্থ। ক্লাবটির সদস্য হতে বার্ষিক যে চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটির সর্বনিম্ন হার প্রায় ২ লাখ ৪২ হাজার টাকা। তবে ক্লাবটির সর্বোচ্চ সেবা পেতে সাড়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। যা সৌদির ধনকুবেরদের জন্য খুব বড় কোনো বিষয় নয়।

ক্লাবটির ভেতর প্রায়ই সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

ক্লাবটিতে প্রবেশ করছিলেন নউফ নামের এক নারী। তিনি স্বীকার করেছেন, আরও বেশি স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য একসময় সৌদি ছাড়ার চিন্তাভাবনা করছিলেন। কিন্তু এখন নিজ দেশেই এসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।

তিনি বলেছেন, “এটি নতুন জীবন। আমাদের পুনর্জন্ম হয়েছে। বিশেষ করে একজন নারী হিসেবে।” নউফ তার এক বন্ধুর সঙ্গে ক্লাবটিতে যান।

তবে এই ক্লাবের ভেতর মদপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ যেন এখানে বসে মদপান করতে না পারেন সেজন্য বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন রাখা হয়েছে।

এই নাইটক্লাবের ভেতর খাওয়া যাবে না মদ। তবে ক্লাবের অতিথিরা বিভিন্ন ধরনের মকটেল উপভোগ করতে পারবেন।

সৌদির ওয়েলথ ফান্ড এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রত্যক্ষ সমর্থনে ক্লাবটি খোলা হয়েছে।

সূত্র: দ্য সান

এমটিআই