নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মারিয়া
‘জুকারবার্গ ও ইলন মাস্করাই সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসক’
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ ও এক্সের প্রধান ইলন মাস্কের মতো ‘‘প্রযুক্তি ভাইয়েরা’’ বর্তমান সময়ের ‘‘সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসক’’ বলে মন্তব্য করেছেন ২০২১ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা।
মার্কিন-ফিলিপিনো এই সাংবাদিক ফিলিপাইনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের প্রশাসনের সময় দায়ের করা অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তবে মার্ক জুকারবার্গ ও ইলন মাস্কের তুলনায় দুতার্তে ‘‘অনেক ছোট স্বৈরশাসক’’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্যের পোউইস শহরে হে সাহিত্য উৎসবে অংশ নিয়ে মারিয়া রেসা বলেছেন, ‘‘জুকারবার্গ এবং মাস্ক প্রমাণ করেছেন আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা কিংবা ভূগোল— সবক্ষেত্রে আমাদের মাঝে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও অনেক বেশি মিল রয়েছে। কারণ আমাদের সবাইকে একইভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, আমাদের অনুভূতি বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর। এর ফলে আমাদের বিশ্বকে দেখার এবং আমাদের কাজ করার উপায়ে পরিবর্তন দেখছি। রেসা বলেন, অনলাইনে রাজনীতি সম্পর্কে কথোপকথন বিশ্বজুড়ে মেরুকরণের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এই ধরনের বিতর্ককে আমরা স্বাধীনভাবে চিন্তা করছি বলে মনে করা হলেও আসলে কিন্তু তা নয়।
তিনি বলেন, ‘‘ফিলিপাইনে এটা ধনী বনাম গরীব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটা বর্ণবাদ। সেখানে এটা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার... রাশিয়ার প্রচারণায় উভয় পক্ষই গলাবাজি করেছে। একটা জিনিস মানুষকে বিশ্বাস করানোই এর লক্ষ্য ছিল না। বরং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিই ছিল এর লক্ষ্য।’’
ফিলিপিনো এই সাংবাদিক বলেন, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো মেরুকরণকে উস্কে দিচ্ছে। ভয়, ক্রোধ এবং ঘৃণার উদ্রেক করছে। তারা এটা একেবারে আমাদের ব্যক্তিগত স্তরে, সামাজিক স্তরেও করছে। মানুষের ওপর প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ কমানোর দু’টি উপায় বাতলে দিয়েছেন মারিয়া রেসা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯৯৬ সালের কমিউনিকেশন ডিসেন্সি আইনের ২৩০ ধারা থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। এই ধারা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে দায়মুক্তি দেয়। মার্কিন কমিউনিকেশন আইনের এই ধারাটি ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে ব্যবহারকারীদের পোস্ট করা বিষয়বস্তুর বিরুদ্ধে মামলা থেকে সুরক্ষা দেয়।
‘‘আর অন্যটি হল, যদি আপনার সন্তান থাকে, তাহলে পর্যাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে দেবেন না। কারণ এটা এক ধরনের হালকা আসক্তিমূলক।’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিতে চীনা মালিকানাধীন টিকটক নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে ‘‘দুর্দান্ত’’ বলে মন্তব্য করেছেন মারিয়া। তবে কেবল টিকটক নয়, বরং আমাদের সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
এসএস