বাজারে বর্তমানে ডায়াবেটিস ও ওজন কমানোর জন্য জনপ্রিয় বিভিন্ন ওষুধ পাকস্থলি বিকল করে দেওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। মার্কিন একদল গবেষকের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে জানা গেছে এই তথ্য।

গত ১৮ থেকে ২১ মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পাকস্থলি ও হজম সমস্যা বিষয়ক ‘ডায়জেস্টিভ ডিজিজ উইক ২০২৪’ নামে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রে ডায়াবেটিসের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ওষুধ ওজেমপিক এবং ওজন হ্রাসের ওষুধ উইগোভির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে এই দুটি ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ইঞ্জেকশনের অ্যাম্পুলে যে তরল থাকে, সেটি এক ধরনের প্রোটিন সেমিগ্লুটাইড। প্রোটিন সেমিগ্লুটাইডের মূল কাজ হলো অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামের একটি হরমোনের নিঃসরণ বাড়ানো।

নিয়মিত এবং ঘন ঘন এ দুটি ওষুধ গ্রহণ করা হলে ইনসুলিনের পাশাপাশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরে পেপটাইড-১ বা জিএলপি-১ নামে হরমোনের নিঃসরণও বেড়ে যায়। শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাত্রায় এ হরমোনের উপস্থিতি থাকলে রোগী প্রথম পর্যায়ে ঘন ঘন বমিভাব, বমি এবং ডায়রিয়ার মতো শারীরিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে এসব শারীরিক সমস্যা স্থায়ী রূপ নেয় এবং ধীরে ধীরে পাকস্থলিকে বিকল করতে থাকে।

প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত নিয়মিত এই দু’ই ওষুধের ইঞ্জেকশন নিয়েছেন এমন এক লাখ ৮৫ হাজার মানুষের শারীরিক তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করে তারা দেখতে পেয়েছেন— এদের মধ্যে দশমিক ৫৩ শতাংশ রোগী পাকস্থলীর সমস্যা এবং দশমিক ৫৫ জন রোগী গলব্লাডার সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। এছাড়া আরও অনেকেই আছেন, ‍যারা শিগগিরই এ দুটি শারীরিক সমস্যার যে কোনো একটিতে আক্রান্তের ঝুঁকিতে আছেন।

এ দুটি ওষুধের অনুমোদন দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুডস অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ওয়াশিংটন ডিসির সম্মেলনে গবেষকরা বলেছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কেউ যদি নিয়মিত এ দুটি ওষুধের কোনো একটি বা দুটি নিয়মিত এবং অপরিমিk মাত্রায় ৬ মাস গ্রহণ করেন তাহলে অদূর ভবিষ্যতে পাকস্থলি অকার্যকর হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েন তিনি।

সূত্র : পিটিআই

এসএমডব্লিউ