ফাইল ছবি

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সেখানকার মানবাধিকার কর্মীরা। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক তদন্তকারীরা সংঘাতে বিপর্যস্ত রাখাইনের ক্রমবর্ধমান লড়াইয়ের ওপর নজর রাখছেন বলে জানিয়েছেন। নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছেন তারা।

মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিটি আইআইএমএম এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘রাখাইনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ এবং সেখানে মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা মূল্যায়ন করছে তারা।’’

২০২১ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের পর রাখাইনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সাথে জান্তা বাহিনীর সংঘাত বৃদ্ধি পায়। আরাকান আর্মি বলেছে, তারা রাখাইনের জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর অধিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করছে। রাখাইনে বর্তমানে নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ৬ লাখ সদস্য রয়েছেন।

২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযানে লাখ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এই ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের গণহত্যা আদালতে মামলা চলছে।

আইআইএমএম বলেছে, ‘‘আমরা বুথিডং শহরে সহিংসতা বৃদ্ধি ও সম্পত্তি ধ্বংসসহ মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং আরাকান সেনাবাহিনীর তীব্র লড়াইয়ের অসংখ্য ঘটনা যাচাই-বাছাই করছি।’’

‘‘এই সহিংসতায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং রাখাইন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরও এর প্রভাব পড়ছে।’’

আরাকান আর্মি বলেছে, তারা গত সপ্তাহে বুথিডং শহরের দখল নিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে জান্তার বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির সর্বশেষ বিজয়ের ঘটনা এটি। শহরের বাসিন্দাদের চলে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল আরাকান আর্মি। পরবর্তীতে লোকজনের নিরাপদ এলাকায় সরে যেতে সহায়তা করেছে তারা। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি রাখাইনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

তবে চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে প্রবাসে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সংগঠনের প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আরাকান আর্মির যোদ্ধারা রোহিঙ্গাদের বুথিডং ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছেন। পরে তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জান্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের সময় আরাকান আর্মির যোদ্ধারা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে যান। বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির ‘‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের’’ ঘটনার অবসানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস