ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। নিজ শহর মাশহাদে হবে তার শেষ ঠিকানা।

এখন চলছে রাইসিকে শেষ বিদায় জানানোর প্রক্রিয়া। তাকে শেষ বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

গত রোববার দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ওই সময় তার সঙ্গে একই হেলিকপ্টারে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দুল্লাহিয়ান ছাড়াও আরও আটজন। যাদের সবাই এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।

 

৬৩ বছর বয়সী সদ্য প্রয়াত এই প্রেসিডেন্টের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইরানের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে।

বৃহস্পতিবার এই শহরের শিয়াদের মূল সমাধি ইমাম রেজার পবিত্র মাজারে তাকে দাফন করা হবে। বুধবার ইরানের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে মাশহাদের কর্মকর্তাদের দাফনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।

এদিকে ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরের রাস্তায় বিশেষ করে ইমাম রেজা মাজারের চারপাশ জুড়ে রাইসির বড় বড় ছবি, কালো পতাকা এবং শিয়াদের নানা প্রতীক টানানো হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হাজারো শোকার্ত মানুষ শামিল হন। পরে তাবরিজ থেকে রাইসি ও তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মরদেহ ইরানের মধ্যাঞ্চলের ঐতিহাসিক কোম শহরে নেওয়া হয়। সেখানেও তাদের জানাজা হয়।

এরপর রাইসি ও আবদুল্লাহিয়ানের মরদেহ তেহরানে নেওয়া হয়। বুধবার রাজধানী তেহরানে রাইসির জানাজায় শোকার্ত হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।

উল্লেখ্য, সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত রোববার দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও উপস্থিত ছিলেন।

সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের একটি বহর নিয়ে রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা তাবরিজে ফিরছিলেন। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।

কিন্তু অন্য দু’টি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়। দুর্ঘটনার পর পরই ব্যাপক উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এই কাজে ৭৩টি উদ্ধারকারী দল অংশ নেয়। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়।

শেষ পর্যন্ত ইরানের রেড ক্রিসেন্ট বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সন্ধান পায়। দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর গত সোমবার সকালে ইরানের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকা থেকে ওই হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়।