রাইসির মৃত্যুতে ইসরায়েলে ‘খুশি,’ যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসাইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ তার ছয় সফরসঙ্গীর নিহতের ঘটনায় ইরানের জনগণকে সান্ত্বনা ও তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে শোক প্রকাশ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর জন্য কেউ কেউ ইসরায়েলকে সন্দেহ করছেন। কেউ আবার দুষছেন যুক্তরাষ্ট্রকে।
বিজ্ঞাপন
তবে ইরানের চিরবৈরী আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েল বলছে রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার সাথে তারা জড়িত নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, দুর্ঘটনার পেছনে আমরা নেই।
তবে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
ইসরায়েলের পাশাপাশি রাইসির মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকেও। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গতকাল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের বিমান চলাচলের নিরাপত্তা আরও খারাপ হয়েছে। ইরানের বার্তা সংস্থা ইরনারও বক্তব্য একই রকম।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর ইরানের পক্ষ থেকে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। কিন্তু অভিযোগ করা হচ্ছে তাতে রাজি হয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ইরান সরকার আমাদের সাহায্য চেয়েছিল। ইরান সরকারকে জানানো হয়েছিল যে আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত। যেমনটা আমরা কোনও বিদেশি সরকার সাহায্য চাইলে করে থাকি। কিন্তু শেষপর্যন্ত লজিস্টিক্সের কারণে আমরা সাহায্য করতে পারিনি।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে পারে এই বিষয় নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন কি না? এর জবাবে তিনি জানিয়েছেন, এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আমেরিকার কোনো ভূমিকা ছিল না।
মার্কিন সিনেটর চাক শুমার সোমবার বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে যে এই ঘটনায় ষড়যন্ত্র করা হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই।
রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্ক নেই ও এই ঘটনায় ইসরাইলের নীতির কোনো পরিবর্তন হওয়ার আশা নেই উল্লেখ করে টাইমস অব ইসরায়েল দেশটির বিরোধী দলনেতা আভিগদর লিবারম্যানের একটি বক্তব্য ছেপেছে। লিবারম্যান বলছেন, রাইসি যে একজন নিষ্ঠুর ব্যক্তি ছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তার মৃত্যুতে আমরা চোখের জল ফেলব না।
ওই প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপমন্ত্রী এভি মাওজ বলেন, এক মাস আগেও ওরা হুমকি দিয়ে বলেছিল, ইসরায়েল আক্রমণ করলে তাদের (ইসরায়েলের) নিস্তার নেই। এখন তারা নিজেরাই ইতিহাসের ধূলিকণায় পরিণত হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে এমন অনেক মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে যেগুলোতে রাইসির মৃত্যুকে ইসরাইলের জন্য ‘সুসংবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের ব্যাত ইয়াম শহরে এক ধর্মীয় নেতা তার ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ইহুদি সপ্তাহে যে প্রার্থনা করা হয় তা যেন তারা পাঠ না করে। উদযাপনের সময় বা ইহুদি উৎসবে চলাকালীন এই প্রার্থনা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এই প্রতিবেদনে ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর নাচ, গান করার ঘটনার বিষয়েও লেখা হয়েছে।
এনএফ