সামাজিকমাধ্যমে ফিলিস্তিনপন্থি পোস্টে লাইক, ভারতে শিক্ষিকা বরখাস্ত
দিন যতই যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারও বেড়েই চলেছে। মানুষের জীবনের সাথে আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়ছে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্সের (সাবেক টুইটার) মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।
আর সেজন্য অনলাইনের অনেক কিছুর প্রভাব বেশ জোরালো ভাবেই পড়ছে দৈনন্দিন জীবনেও। তেমনই এক ঘটনায় ভারতে এক স্কুলের প্রিন্সিপালকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মুসলিম ওই শিক্ষিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনপন্থি পোস্টে লাইক দিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
মুম্বাইয়ের একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন তিনি। বুধবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
— NDTV (@ndtv) May 8, 2024
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ের সোমাইয়া স্কুলের অধ্যক্ষ পারভীন শেখকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থি পোস্টে লাইক দেওয়ার জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের পোস্টের সাথে সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে ‘হামাসপন্থি, ইসলামপন্থি, এবং হিন্দু-বিরোধী’ মতামতকে সমর্থন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে সোমাইয়া স্কুল বলেছে, পারভীন শেখের ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যকলাপগুলো ‘আমরা যে মূল্যবোধগুলো লালন করি তার পুরোপুরি বিপরীত’ এবং তাই ‘এ নিয়ে উদ্বেগের কারণে’ এবং ‘সতর্কতার সাথে বিষয়টি বিবেচনা’ করার পর স্কুল ম্যানেজমেন্ট তার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করছে।’
বিবৃতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, ‘সতর্ক বিবেচনার পরে, আমাদের ঐক্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির সঙ্গে আপস না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ম্যানেজমেন্ট সোমাইয়া বিদ্যাবিহারের সাথে পারভীন শেখের সম্পর্ক ছেদ করছে।’
এনডিটিভি বলছে, পারভীন শেখ প্রায় ১২ বছর ধরে সোমাইয়া স্কুলের সাথে যুক্ত ছিলেন। সাত বছর আগে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। পারভীন শেখের লিংকডইন প্রোফাইল অনুসারে, শিক্ষা ক্ষেত্রে ৩০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
প্রি-সার্ভিস এবং ইন-সার্ভিস শিক্ষকদের কোচিং, মেন্টরিং এবং পেশাগত উন্নয়নে পারভীন শেখের দক্ষতা রয়েছে। এছাড়া তিনি পাঠ্যক্রম ডিজাইন এবং কার্যকর ক্লাসরুম লেআউট তৈরিতেও দক্ষ।
শিক্ষকতার পাশাপাশি পারভীন শেখ স্কুল অডিটের সাথেও জড়িত বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
আরও পড়ুন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বিতর্কের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে অধ্যক্ষাকে অপসারণের সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করেছে। তারা বলেছে, ‘পারভীন শেখের ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপ সম্প্রতি আমাদের নজরে এসেছে। তিনি সোমাইয়া স্কুলের নেতৃস্থানীয় পদে ছিলেন। আমরা যে মূল্যবোধগুলো লালন করি তার সঙ্গে তার কর্মকাণ্ড আমাদের কাছে বিভ্রান্তিমূলক মনে হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি। সেই সঙ্গে আমরা এটাও মনে করি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ নয়। অন্যদের প্রতি দায়িত্ব ও তাদের সম্মান রক্ষার কথা বিবেচনায় রেখে মত প্রকাশ করা উচিত। আমাদের ঐক্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি নিশ্চিত করতে পারভিন শেখের সঙ্গে সোমাইয়া বিদ্যাবিহার সম্পর্ক ছেদ করেছে।’
টিএম