গতকাল সোমবার রাতে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হওয়ার ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের এ ঘোষণা ইসরায়েলের জন্য বড় ‘চমক’ ছিল। কারণ তারা ভাবতেও পারেনি হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার ঘোষণা দেবে।

ইসরায়েল মনে করেছিল, হামাস এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে। যেটিকে যুক্তরাষ্ট্র ‘উদার চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছিল।

হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার আগে দখলদার ইসরায়েল রাফার মিসর সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চল থেকে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।

হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার অপ্রত্যাশিত ঘোষণা দেওয়ার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি তাদের বিশ্লেষণে বলেছে, নেতানিয়াহু রাজনৈতিকভাবে আবদ্ধ। কারণ বর্তমানে তার নেতৃত্বাধীন যে জোট সরকার রয়েছে সেটি ইহুদি উগ্র জাতীয়তাবাদী দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল। এই উগ্রপন্থি জাতীয়তাবাদী দলগুলো হুমকি দিয়েছে, যদি রাফাতে হামলা করা ছাড়া নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তাহলে তারা সরকার ভেঙে দেবে।

অপরদিকে হামাসের কাছে যেসব জিম্মি রয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন— যেন হামাসের সঙ্গে নেতানিয়াহু চুক্তি করেন এবং তাদের স্বজনদের মুক্ত করে আনেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রও যুদ্ধবিরতির পক্ষে। অসংখ্য নিরপরাধ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যার পরও ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান ধরে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু এ বিষয়টি তার ভোট ব্যাংকের ক্ষতি করছে। এছাড়া হামাসের কাছ থেকে তো সামরিক চাপ রয়েছেই।

যদি বাইডেন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে চাপ দেন তাহলে নেতানিয়াহুকে দুটি বিষয় থেকে একটি জিনিস বেঁছে নিতে হবে। হয় তাকে সরকার বাঁচাতে উগ্রপন্থিদের কথা শুনতে হবে। আর নয়ত যুক্তরাষ্ট্র যে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে সেগুলো হারাতে হবে।

এছাড়া এখন যুদ্ধবিরতির অর্থ হলো হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পুরোপুরি জয় পাবে না। কারণ যুদ্ধ শুরুর পর তারা ঘোষণা দিয়েছিল গাজা থেকে হামাসকে নির্মূল করা হবে এবং সেখানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে।

অর্থাৎ নেতানিয়াহু এখন কঠিন একটি পরিস্থিতিতে রয়েছেন। আর এখন তিনি কি বেঁছে নেবেন সেটি নির্ণয় করা তার নিজের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই