ইউক্রেন যুদ্ধ
পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি জার্মানির
টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মাথায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষার জন্য তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত।
আর এবার ইউক্রেনের কাছে পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বৈশ্বিক পরাশক্তি এই দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই ব্যক্তি। এমন অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে সতর্ক করেছে জার্মানি।
বিজ্ঞাপন
এমনকি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনকে ভুল হিসেবেও আখ্যায়িত করেছে পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটি। মঙ্গলবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে রাশিয়ার মহড়ার ঘোষণার পর ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের বিরুদ্ধে সোমবার মস্কোকে সতর্ক করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া এবং এস্তোনিয়া - তিনটি বাল্টিক দেশের প্রধানমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে লাটভিয়ার রাজধানী রিগায় একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে শলৎস বলেন, ‘এটা সর্বদা উচ্চঃস্বরে বলা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয়।’
ওলাফ শলৎসের মতে, সুইজারল্যান্ডে একটি শান্তি সম্মেলন আয়োজনের কাজ চলছে, যা অবশ্যই রাশিয়ার কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে।
আনাদোলু বলছে, শলৎস সোমবার চ্যান্সেলর হিসাবে তার প্রথম সরকারি সফরে লাটভিয়ায় পৌঁছেছেন। তিনটি বাল্টিক দেশ সফরের অংশ হিসাবে তিনি দেশটিতে পৌঁছান। এই তিন দেশের সকলেই ন্যাটো অংশীদার।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন ছিল ভুল এবং এটি ইউরোপকে বিভক্ত করে ন্যাটোকে দুর্বল করার পরিবর্তে তাদের ঐক্যকে শক্তিশালী করেছে।
এর আগে সামরিক মহড়ার অংশ হিসাবে নিজ দেশের সামরিক বাহিনীকে ইউক্রেনের কাছে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন কাজের মহড়া চালানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত হুমকির মুখে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে এই মহড়ার নির্দেশ দেন তিনি।
ক্রেমলিনের মতে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে পশ্চিমা ও ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সামরিক মহড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে শলৎস বাল্টিক সাগর অঞ্চলে ন্যাটো অংশীদারদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, জার্মানি নির্ভরযোগ্য সামরিক সহায়তা প্রদান করবে। লিথুয়ানিয়ান শহর পাবরাদে জার্মান সৈন্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বলেন, ‘জার্মানি দৃঢ়ভাবে বাল্টিক দেশগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন
তার ভাষায়, ‘এবং এর মানে হলো- আমরা একে অপরকে রক্ষা করি এবং সমস্ত রাষ্ট্র তাদের অঞ্চলের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করার জন্য আমাদের ওপর ভরসা করতে পারে।’
আনাদোলু বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরে পরিবর্তিত নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসাবে লিথুয়ানিয়ায় প্রায় ৪ হাজার ৮০০ সৈন্যের একটি ব্রিগেড স্থাপন করা শুরু করেছে জার্মানি।
এছাড়াও জার্মান সৈন্যরা বর্তমানে লিথুয়ানিয়ায় বড় পরিসরের ন্যাটো সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
টিএম