কানাডার বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে দিনের বাকি অংশের জন্য পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বুধবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অস্বাভাবিক এই পদক্ষেপের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

কানাডাতে আগামী বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এবং সেই নির্বাচনে মূলত এই দুই নেতার মধ্যেই প্রধান লড়াই হওয়ার কথা রয়েছে।

রয়টার্স বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী দলে থাকা কনজারভেটিভরা জরিপে বেশ এগিয়ে আছে এবং কার্বন ট্যাক্সের জন্য বিরোধী নেতা পিয়েরে পয়লিভের ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারকে নিয়মিত আক্রমণ করছেন। এর ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে বলেও সমালোচনা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার এই বিরোধী নেতা হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই উন্মাদ প্রধানমন্ত্রীর এই উন্মাদ নীতির অবসান কবে হবে?’

এই বক্তব্যের পর স্পিকার গ্রেগ ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তার মন্তব্যটি অসংসদীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। এরপর তাকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চারবার অঅহ্বান জানান লিবারেল এই স্পিকার।

তবে পয়লিভের প্রতিবারই সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, এর পরিবর্তে তিনি চরমপন্থি বা মৌলবাদী শব্দটি ব্যবহার করতে চান।

এই পর্যায়ে স্পিকার ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তিনি স্পিকারের কর্তৃত্বকে উপেক্ষা করছেন। এরপর তিনি বলেন: ‘আমি আপনাকে আদেশ দিচ্ছি, আপনি হাউস থেকে চলে যান ... দিনের অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য।’

এরপর পয়লিভের এবং তার বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা তখন চলে যান।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সঙ্গে পয়লিভেরের বেশ উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাকে তিনি (ট্রুডো) একজন চরমপন্থি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন আন্দোলনের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবারের শুরুতে ট্রুডো সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এবং পয়লিভেরকে অতি ডান গোষ্ঠীর সাথে সময় কাটানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘তারা দায়িত্বশীল কোনও নেতৃত্ব নয়। তারা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক, তারা কানাডিয়ানদের জন্য বিপজ্জনক।’

অবশ্য কানাডার পার্লামেন্ট থেকে এভাবে কাউকে বের করে দেওয়া তুলনামূলকভাবে বিরল।

উল্লেখ্য, কানাডার পরবর্তী নির্বাচন অবশ্যই ২০২৫ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং জনমতের সমীক্ষাগুলোতে কনজারভেটিভরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

টিএম