ভোটচলাকালীন প্রিজাইডিং অফিসারকে চড়, গ্রেপ্তার বিজেপি নেতা (ভিডিও)
ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। আর দ্বিতীয় দফার এই ভোটের মধ্যে ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা।
ভোট চলাকালীন প্রিজাইডিং অফিসারকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় বেশ দ্রুতই। পরে অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরাতে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
— NDTV (@ndtv) April 29, 2024
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ঘটনাটি ঘটেছিল ত্রিপুরার পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের একটি বুথে। বিজেপি নেতার চড় মারার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরে অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ওই বিজেপি নেতার নাম কাজল দাস। তিনি উত্তর ত্রিপুরা জেলার বিজেপি সভাপতি। এমন ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বিজেপিকে।
গত শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হয়েছে ভারতের ১৩টি রাজ্যের মোট ৮৯টি আসনে। অভিযোগ, দ্বিতীয় দফার ভোট চলাকালীন একটি ঘটনাকে নিয়ে বিতন্ডার জেরে প্রিজাইডিং অফিসারকে চড় মেরেছিলেন বিজেপি নেতা। চড় মারার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়তেই সরব হয়েছিল বিরোধীরা।
ঘটনাটি ঘটেছিল বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের ২২ নম্বর ভোটকেন্দ্রে। বিজেপি নেতার পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ভিডিওর ভিত্তিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আর এরপরই অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও বাকি অভিযুক্তদের এখনও চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ওই অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাসও দিয়েছে পুলিশ।
তবে গ্রেপ্তার হলেও ইতোমধ্যে জামিনও পেয়ে গেছেন কাজল। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে কেন আরও কঠোর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হলো না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
কী ঘটেছিল?
জানা গেছে, ভোটগ্রহণ শেষে বৈধ ভোটার কার্ড ছাড়াই কিছু লোক ভোট দিতে যায়। কিন্তু, প্রিজাইডিং অফিসার তাদের বাধা দেন। তিনি জানান, বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও ভোটার ভোট দিতে পারবেন না। মূলত প্রিজাইডিং অফিসার তাদের ভোট দেওয়ার অনুমতি দেননি।
এরপর, প্রিজাইডিং অফিসারের বক্তব্য শোনার আগেই কাজল দাসের নেতৃত্বে আচমকা দুষ্কৃতিকারীরা তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। কাজল দাস ভোটারদের সামনে অফিসারকে চড় মারেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ধর্মনগরের সহকারি রিটার্নিং অফিসার কাজল দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কদমতলা থানার অফিসার ইনচার্জ জয়ন্ত দেবনাথ জানান, অভিযোগ দায়ের করার পরেই সেক্টর অফিসার, মাইক্রো পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই ভাইরাল ভিডিওটির তদন্ত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৩৫৩, ৩৩২ এবং ১৩১ ধারার পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪ ধারার অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি জানান, আইন তার নিজের পথে চলবে। পুলিশ ইতোমধ্যেই ভাইরাল ভিডিও ফুটেজটি সংগ্রহ করেছে। তাতে কাজল দাসকে স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা গেছে। বাকিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, অভিযুক্ত কাজল ওই অঞ্চলের ভোটার নন। বেআইনি ভাবে সেখানে ঢুকেছিলেন তিনি। এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী সিপিএম। অন্যদিকে দ্রুত দায়মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছে বিজেপি।
দলটির এক মুখপাত্র বলেছেন, তিনি কিছু জানেন না, কিছু হয়ে থাকলে পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে।
টিএম