ভারতের সরকারি সংবাদমাধ্যম দূরদর্শনের লোগোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। লালের বদলে দূরদর্শনের লোগো এখন গেরুয়া। লোকসভা ভোটের সময় দূরদর্শনের এই লোগোর রং বদল ঘিরে তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। 

বিরোধীরা বলছেন, গেরুয়া করার পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রসার ভারতীর সিইও গৌরব দ্বিবেদী বলছেন, লোগোতে উজ্জ্বল রং কেবল বাণিজ্যিক কৌশল হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে, রাজনীতির সঙ্গে এর কোনো যোগাযোগ নেই। 

গত বছরের জানুয়ারি মাসে ‘দূরদর্শন পোথিগাই’ টেলিভিশন চ্যানেলের নাম বদল করে ‘ডিডি তামিল’ করে দেওয়া হয়। সেই সময় এই বিষয় নিয়ে তুমুল বিতর্কও হয়েছিল। ডিডি তামিল লোগোও পরিবর্তন করে ‘গেরুয়া’ রং করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সামাজিক মাধ্যমে লোগো পরিবর্তনের বিষয়টির নিন্দা করেছেন।

তিনি লেখেন, আমি অবাক হয়ে দেখছি যখন দেশজুড়ে সাধারণ নির্বাচন চলছে, তখন হঠাৎই দূরদর্শনের লোগোর রং বদলে গেরুয়া করে দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং বেআইনি। 

এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির যোগের বিষয় উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নও করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিজেপির প্রতি সরকারি সম্প্রচার সংস্থার পক্ষপাতিত্বের বিষয়ে অনেক কিছুই বলে এই পদক্ষেপ। ভোটের সময় গেরুয়া সমর্থনে এমন প্রচারের অনুমতি নির্বাচন কমিশন দিল কীভাবে? নির্বাচন কমিশনের উচিত অবিলম্বে এটা বন্ধ করা এবং দূরদর্শনের লোগোর পুরোনো রং ফিরিয়ে আনা। 

২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রসার ভারতীর সিইও’র দায়িত্ব পালন করা জওহর সরকার বলছেন, নতুন লোগো দেখে মনে হয় যেন কোনো বিশেষ দলের প্রচার করা হচ্ছে। 

ডিডি নিউজের লোগোর রং বদলে গেরুয়া হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের সরকারি সম্প্রচারক দূরদর্শনের ঐতিহাসিক লোগোতে গেরুয়া রং করা হয়েছে। একজন প্রাক্তন সিইও হিসেবে আমি দূরদর্শনের গেরুয়াকরণকে উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি। এটা এখন আর প্রসার ভারতী নেই, এটা একটা বিশেষ দলের প্রচার ভারতী।

তিনি আরও বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ এটা দেখেন। কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের রং ছড়ানোর জন্য এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করাটা ঠিক নয়। এখন আপনি বলতেই পারেন যে জাতীয় পতাকাতেও এই রঙ রয়েছে, তবে সেখানে অন্যান্য রঙের সঙ্গে এটা রয়েছে।  

এনএফ