ভারতে নারী ভোটার বাড়ছে, ৫ বছরে ছাপিয়ে যেতে পারে পুরুষদের
ভারতে ২০২৯ সালের লোকসভা ভোটে সংখ্যার নিরিখে নারী ভোটাররা ছাপিয়ে যেতে পারেন পুরুষ ভোটারদের। নারী ভোটারদের সংখ্যাবৃদ্ধির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে। রিপোর্ট বলছে, চলতি বছরের লোকসভা ভোটে পুরুষ ভোটারদের সংখ্যার কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন নারী ভোটাররা।
ভারতের এসবিআই রিসার্চ প্রকাশিত ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে মোট ৪২ কোটি ভোটদাতা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছিলেন তাদের মধ্যে ১৯ কোটি নারী। ওই নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৮৯ কোটি। তার মধ্যে ৪৬ কোটির কিছু বেশি পুরুষ এবং ৪৩ কোটির কিছু বেশি নারী। এবার ভোটারের মোট সংখ্যা প্রায় ৯৬ কোটি ৮০ হাজার। এর মধ্যে সাড়ে ৪৯ কোটির কিছু বেশি পুরুষ এবং ৪৭ কোটির কিছু বেশি নারী।
বিজ্ঞাপন
দেশে নারী ভোটারের অনুপাত বেড়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। ১৯৬২-র লোকসভা নির্বাচনে পুরুষ ভোটার ছিল নারী ভোটারের চেয়ে ১৬.৬৮ শতাংশ বেশি। ২০০৪-এর নির্বাচনে এই পার্থক্য কমে হয় আট শতাংশ। ২০১৪-তে নারীদের থেকে পুরুষ ভোটার ছিলেন ১.৪৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯ এবং ২০২৪-এ সেই ব্যবধান আরও কমেছে। আরও কমেছে ভোটপর্বে পুরুষ এবং নারীদের অংশগ্রহণের অনুপাত।
আরও পড়ুন
গত কয়েকটি সাধারণ নির্বাচনে ভোটদানের হার বিশ্লেষণ করে ওই রিপোর্ট বলছে, ২০২৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ৭৩ কোটি ভোটার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। তাদের মধ্যে ৩৭ কোটি নারী এবং ৩৬ কোটি পুরুষ হওয়ার সম্ভাবনা।
আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশে নারী ভোটারের সংখ্যা সাধারণত পুরুষদের চেয়ে বেশি। এর ব্যতিক্রম হয়নি গত অর্ধশতকে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীরা বেশি সংখ্যক নারী ভোট পেয়েছেন চল্লিশ, পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে। সত্তরের দশক থেকেই নারীদের ভোট ক্রমশ ঢলে পড়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের দিকে। এর পিছনে অবশ্যই ছিল নারীদের সমান অধিকারের বা গর্ভপাত সংক্রান্ত সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যু।
১৯৮০-র নির্বাচনে রোনাল্ড রেগন জিতলেও নারীদের ভোটে আট শতাংশ এগিয়ে ছিলেন জিমি কার্টার। ভারতেও অতীতে নারী ভোটারদের বড় অংশ সমর্থন করতেন কংগ্রেসকে। কিন্তু গত এক দশকের কয়েকটি পরিসংখ্যান বলছে, সেই সমর্থনের পাল্লা কিছুটা ঝুঁকে পড়েছে নরেন্দ্র মোদীর দিকে। তবে ভারতবর্ষের মতো সামাজিক-অর্থনৈতিক-ধর্মীয় বৈচিত্রের দেশে ‘নারী ভোটার’ একটি অখণ্ড সত্তা হতে পারে কি না, তা নিয়ে তর্ক রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মনে।
পিএইচ