জেনারেল সোলাইমানি হত্যায় ব্রিটিশ নিরাপত্তা কোম্পানি জড়িত: ইরান
ইরানের রেভ্যুলেশোনারি গার্ডের এলিট বাহিনী কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যায় ‘জি-৪এস’ নামে এক ব্রিটিশ নিরাপত্তা কোম্পানি মার্কিন বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সরকারি কৌঁসুলি আলি আল-কাসি মেহের। বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদ সম্মেলনে আলি আল-কাসি মেহের দাবি করেন, ব্রিটেনের নিরাপত্তা কোম্পানি জেনারেল সোলাইমানির বিষয়ে মার্কিন সেনাদের তথ্য দিয়ে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেছে। ব্রিটিশ কোম্পানি জি-৪এস বাগদাদ বিমানবন্দরের বিমানের ফ্লাইটের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্বপালন করছিল। জেনারেল সোলাইমানি ও তার সঙ্গীরা সিরিয়া থেকে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে তাদের খবর মার্কিন বাহিনীকে জানিয়ে দেয় ব্রিটেনের এই কোম্পানি।
বিজ্ঞাপন
এরপরই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে জেনারেল সোলাইমানিকে বহনকারী গাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে মার্কিন সেনারা। অবশ্য তথ্য পাচারের অভিযোগ তুললেও ব্রিটিশ নিরাপত্তা কোম্পানি ‘জি৪এস’-এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে কোনো প্রমাণ সামনে আনেননি ইরানের এই সরকারি কৌঁসুলি।
মেহের বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের জন্য ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, কাতার, জর্দান এবং কুয়েত পরোয়ানা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যেসব অপরাধী বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে তাদের খুঁজে বের করে ইরানে নিয়ে আসার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইরানের এই সরকারি কৌঁসুলি আরও বলেন, জার্মানিতে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিও জেনারেল সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের আগে তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে জড়িত ছিল।
এর আগে জেনারেল সোলাইমানির গাড়িবহরে ড্রোন হামলা ও তাকে হত্যার কাজে মার্কিন বাহিনী জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত রামস্টেইন বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেছিল ইরানি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে জেনারেল সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের সময় বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার কথা স্বীকার করেছে ব্রিটিশ কোম্পানি ‘জি৪এস’। তবে সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে তারা।
লিখিত বিবৃতিতে জি৪এস’র মুখপাত্র আলজাজিরাকে বলেন,‘২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও আবু মাহদি আল মুহানদিসের ওপর হামলা ও হত্যার ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে জেনারেল সোলাইমানিকে বহনকারী গাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে মার্কিন সেনারা। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
টিএম