ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, তার দেশ সপ্তাহান্তে চালানো ইরানের হামলার জবাব দেবে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি এড়াতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ।

এছাড়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সোমবার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা।

অবশ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে ইসরায়েলের সরকারের দিক থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ইরান ইতোমধ্যেই বলেছে, তাদের হামলার জবাবে ইসরায়েল যদি আবারও হামলা চালায় তাহলে এর চেয়ে বেশি কঠিন জবাব দেওয়া হবে।

ইরান বলছে, সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় রেভ্যুলশনারি গার্ডের একজন সিনিয়র কমান্ডারসহ সাত জন নিহত হওয়ার পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে ইসরায়েলের ভেতরে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালানোর মাধ্যমে।

ইরান মনে করছে, শনিবার মধ্যরাতের সেই হামলার মাধ্যমে বিষয়টির অবসান হয়েছে এবং তারা আর হামলা করতে চায় না। কিন্তু ইসরায়েল সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভি বলেছেন, ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

ইরানের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেভাটিম বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী প্রধান একথা বলেন। দক্ষিণ ইসরায়েলে অবস্থিত নেভাটিম এয়ারবেসে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের ভূখণ্ডে এতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল এবং ড্রোন নিক্ষেপের জবাব দেওয়া হবে।’

মূলত ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে এই মুহূর্তে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, তাকে অনেকেই সে দেশের ইতিহাসে সব চেয়ে ‘কট্টরপন্থি’ বা হার্ডলাইন সরকার বলে বর্ণনা করে থাকেন। গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের চালানো অতর্কিত হামলার জবাব দিতে ইসরায়েল সময় নিয়েছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা।

তারপর ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা একটানা গাজা ভূখণ্ডে তীব্র অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের প্রতি পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের হাতে বেশকিছু বিকল্প আছে। তবে নেতানিয়াহু সরকার কোন ধরনের বিকল্প ব্যবহার করবেন সেটি বোঝা মুশকিল।

এদিকে বিশ্বনেতারা ইসরায়েলকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ইরানের হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাথে টেলিফোনে কথা বলেন।

তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে এটিও জানানো হয়েছে, ইসরায়েল যদি ইরানে পাল্টা হামলা চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে যোগ দেবে না।

ওয়াশিংটন এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সংযমের আহ্বানের সাথে মিল রেখে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও একই ধরনের আবেদন করেছেন।

টিএম