দীর্ঘ ৩২ দিন জিম্মিদশায় থাকার পর অবশেষে সোমালি জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ এবং এটির ২৩ নাবিক।

দস্যুরা মুক্তিপণের অর্থ পাওয়ার পর গতকাল শনিবার (১৩ এপ্রিল) নাবিকরা মুক্তি পান। জলদস্যুদের কত টাকা মুক্তিপণ দিতে হয়েছে এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি জাহাজটির মালিক ও বাংলাদেশ সরকারের কেউ।

তবে সোমালি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি সোমালিয়া এবং ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যেসব জলদস্যু বাংলাদেশি জাহাজটি জব্দ করেছিল তাদের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকার সমান।

ডেইলি সোমালিয়া জানিয়েছে, অর্থ পাওয়ার পর কিছু জলদস্যু স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পুটল্যান্ডের উপকূলে পালিয়ে গেছে। এখন এই দস্যুদের ধরতে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সোমালিয়ার আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।

আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশি জাহাজ জিম্মি করে দস্যুরা মুক্তিপণ আদায়ে সক্ষম হয়েছে। তাই অন্যান্য দস্যুরাও জাহাজ জব্দ করার মিশনে নামতে পারে।

এদিকে বৃটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সও জানিয়েছে, জলদস্যুদের ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দিয়েই বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা হয়েছে। তারা দুই দস্যুর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছে। দস্যুরা তাদের জানিয়েছে, দুই দিন আগেই মুক্তিপণের অর্থ দেওয়া হয়। এরপর অর্থগুলো আসল নাকি নকল ছিল সেটি যাচাই করা শুরু করে তারা। এরপর অর্থগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে তারা পালিয়ে যায়।

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কয়লা নিয়ে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালি দস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এটির মালিক কবির রি রোলিং মিলস। ওই সময় জাহাজটিতে ২৩ নাবিক ছিলেন।

তাদের ছাড়িয়ে আনতে ভারতীয় নৌবাহিনী সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু নাবিকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এতে সম্মতি দেয়নি বাংলাদেশ সরকার।

এর বদলে আলোচনার মাধ্যমে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার পথ অনুসরণ করা হয়। এতে করে সব নাবিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

সূত্র: দ্য ডেইলি সোমালিয়া ও রয়টার্স

এমটিআই