ফাইল ছবি

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে গভীর রাতে সরাসরি ইসরায়েলের ওপর এই হামলা করে তেহরান।

ইরানের এই হামলাকে ইসরায়েলের জন্য ‘গুরুতর হুমকি’ বলে আখ্যায়িত করেছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে ইরানের ‘নির্লজ্জ হামলার’ নিন্দা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এছাড়া ইরানের হামলার পর জার্মানি ও ফ্রান্স ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। রোববার (১৪ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পশ্চিমা আরও কয়েকজন নেতার মতো ইসরায়েলে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ।

আলবানিজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই বেপরোয়া হামলা না চালানোর জন্য আমাদের এবং আরও অনেকের আহ্বানকে উপেক্ষা করেছে ইরান। এই উত্তেজনা ইসরায়েল এবং সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি।’

এদিকে ইরানের ‘নির্লজ্জ হামলার’ নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আল জাজিরা বলছে, ইরানের হামলার পরপরই মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুর সাথে ফোনে কথা বলেন।

আর এর পরপরই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলার বিষয়ে তিনি একটি বিবৃতি জারি করেন। সেখানে বাইডেন বলেন, ‘সম্ভাব্য সবচেয়ে জোরালো ভাষায়’ তিনি এই হামলার নিন্দা করছেন।

বাইডেন বলেন, এই অঞ্চলে মোতায়েন থাকা মার্কিন বাহিনী ইসরায়েলকে ‘প্রায় সমস্ত ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র’ নামিয়ে নিতে সহায়তা করেছে এবং মিত্রদের সুরক্ষার জন্য ওয়াশিংটনের ‘লোহার আবরণের মতো দৃঢ় প্রতিশ্রুতির’ বিষয়টি পুনর্নিশ্চিত করেছে।

তিনি আরও বলেছেন, শনিবার ইসরায়েলে ইরানি এই হামলার সময় মার্কিন বাহিনী বা স্থাপনাগুলোতে কোনও হামলা না হলেও ‘আমরা সমস্ত হুমকির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকব’।

এদিকে ইরানের হামলার পর জার্মানি ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। একজন মুখপাত্রের মতে, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার ‘সম্ভাব্য সবচেয়ে জোরালো ভাষায়’ নিন্দা করেছেন।

স্টেফেন হেবেস্ট্রেট বলেছেন, ‘এই দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অযৌক্তিক হামলার মাধ্যমে ইরান আঞ্চলিক উত্তেজনার ঝুঁকি নিচ্ছে। এই কঠিন সময়ে, জার্মানি ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা এখন আমাদের জি-৭ অংশীদার এবং মিত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে আরও প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করব।’

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ইসরায়েলের সাথে ‘পূর্ণ একাত্মতা’ প্রকাশ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইরান এবং তার প্রক্সিদের অবিলম্বে এটি বন্ধ করতে হবে’।

ফ্রান্স বলেছে, ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে ইরান ‘সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি’ নিয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলে ইরানের হামলার নিন্দাও করেছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজার্ন।

এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন: ‘এই ধরনের অভূতপূর্ব পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে, ইরান তার অস্থিতিশীলতার কাজের একটি নতুন স্তরে পৌঁছেছে এবং একটি সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি নিচ্ছে।’

তিনি ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য প্যারিসের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে  ইসরায়েলকে আশ্বস্ত করেছেন।

অন্যদিকে ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর সৌদি আরব সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অঞ্চলে ‘সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ‘যুদ্ধের বিপদ’ এড়াতে সব পক্ষকে সংযমের এই আহ্বান জানায়।

মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা এসপিএ’র প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংঘাত আরও প্রসারিত হলে ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কেও সতর্ক করেছে সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

টিএম