ইসরায়েলে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার হুমকিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। ভারত, ফ্রান্স এবং রাশিয়া ইতোমধ্যে তাদের নাগরিকদের জন্য ইসরায়েলে ভ্রমণ বিষয়ক সতর্কবার্তা জারি করেছে।

আগের দিন ইসরায়েলে বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ বিষয়ক বিধিনিষেধ জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার বিবিসির মার্কিন অংশীদার প্রতিষ্ঠান সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ইসরায়েলে ইরানের হামলার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেই হামলা ঘটলে যুক্তরাষ্ট্র সর্বাত্মক ভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করবে।

এদিকে তেহরান জানিয়েছে, যদি কোনো রাষ্ট্র বা পক্ষ ইসরায়েলের সমর্থনে এগিয়ে আসে, তাহলে তাকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে এক বোমা হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছিলেন। হামলাটি যে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) চালিয়েছিল— বিভিন্ন সাক্ষ্য ও আলামতে তার প্রমাণ পাওয়া যেছে।

দাপ্তরিকভাবে ইসরায়েল এখনও এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ইরান এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

হামলার পর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ানকে ফোন করে সহিংসতার জের আর না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন, তবে ইরান সেই আহ্বানে সাড়া দেবে— এমন সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

কারণ, নিহত ১৩ জনের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা কুদস ফোসের সিরিয়া ও লেবানন শাখার কমান্ডারসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক চরম বৈরী। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস, লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লা, ইয়েমেনের হুথিসহ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিয়মিত ইরান মদত দেয়। এই গোষ্ঠীগুলোর মূল লক্ষ্য ইসরায়েল রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অতর্কিত হামলা ও তার জেরে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর এক মাস পর থেকে ইরানের মদতপুষ্ট দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুথি ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এই দুই গোষ্ঠীর মাধ্যমে এতদিন ইরান হামাসের হয়ে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ চালাচ্ছিল। যদি ইরান সত্যিই হামলা চলায়, তাহলে সেটি হবে ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট ও বিস্ফোরক ড্রোনের মজুত বেশ সমৃদ্ধ। ইসরায়েলের ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত হানতে পারে— এমন পাল্লার যথেষ্ট সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে ইরানের অস্ত্রভাণ্ডারে।

দামেস্কে হামলা রপর দেশটির সর্বোচ্চ অধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি চলতি সপ্তাহে এক ভাষণে বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই এবং অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে এবং এখন থেকে বিশ্বের কোনো দেশের ইসরায়েলি দূতাবাস আর নিরাপদ নয়।’

সূত্র : এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড

এসএমডব্লিউ