হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া -ফাইল ছবি

দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রধান নেতা ঈসমাইল হানিয়ার তিন ছেলে ও তিন নাতি-নাতনি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতরের দিন আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে হানিয়ার ছেলেদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালানো হয়।

হানিয়ার ছেলেরা আল শাতি ক্যাম্পে ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো।

ছেলে ও নাতি-নাতনিদের মৃত্যুর খবরে (শহীদ হওয়ায়) আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন হামাস প্রধান। তিনি বলেছেন, “আল্লাহকে ধন্যবাদ, আমাদের ওপর তাদের শহীদ হওয়ার মর্যাদা প্রদান করায়।”

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ছেলেদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈসমাইল হানিয়া।

যে সময় তিনি ছেলেদের মৃত্যুর সংবাদ শুনতে পান তখন কাতারের রাজধানী দোহাতে চিকিৎসাধীন কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি।  

হানিয়া যখন ছেলে ও নাতি-নাতনিদের মৃত্যুর সংবাদ শুনছিলেন তখন সেই মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন কেউ একজন। এতে দেখা যাচ্ছে সংবাদটি পাওয়ার পর কিছুটা বিমর্ষ হয়ে যান তিনি। তবে সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নেন এবং হেসে বলেন, “আল্লাহ তাদের পথকে সহজ করে দিক।”

সন্তানদের মৃত্যুতে বিচলিত হননি হামাস প্রধান। আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “শহীদদের রক্ত এবং আহতদের যন্ত্রণার মাধ্যমে আমরা আশা তৈরি করি, আমরা ভবিষ্যৎ তৈরি করি, আমরা আমাদের মানুষ ও জাতির জন্য স্বাধীনতা ও মুক্তি তৈরি করি।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষ্যে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তার ছেলেরা। ওই সময় হামলা চালানো হয়।

হামাস প্রধান দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, নেতাদের বাড়িঘর ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে হামাসকে থামানো যাবে না।

তিনি বলেছেন, “কোনো সন্দেহ নেই এই শত্রুরা প্রতিশোধ, হত্যা এবং রক্তপাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এবং তারা কোনো আইন মানেনা। হানিয়া জানিয়েছেন, চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তার পরিবারের ৬০ সদস্য নিহত হয়েছেন।

হামাস প্রধান আরও জানিয়েছেন, তার ছেলেদের হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধের গতিপথ বদলাবে না এবং হামাস যুদ্ধবিরতির দাবি থেকে একটুও সরে আসবে না।

তিনি বলেছেন, “যদি তারা মনে করে আমাদের সন্তানদের লক্ষ্য করার মাধ্যমে এই মুহূর্তে হামাসের অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে, তাহলে তারা ভ্রান্তিতে আছে।”

“ফিলিস্তিনের সন্তানদের চেয়ে আমার সন্তানদের রক্তের মূল্য বেশি নয়। ফিলিস্তিনের সকল শহীদ আমার সন্তান।” যোগ করেন হানিয়া।

সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল

এমটিআই