হুথিদের আকাশ প্রতিরক্ষা-ড্রোন সিস্টেম ধ্বংসের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আবারও হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ এই হামলায় হুথিদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ড্রোন সিস্টেম ধ্বংসের দাবি করেছে মার্কিন বাহিনী।
এর আগে গত রোববার মার্কিন, ব্রিটিশ ও ইসরায়েলি জাহাজে হামলার কথা জানিয়েছিল হুথি গোষ্ঠী। যদিও সেসময় বাণিজ্যিক, মার্কিন এবং জোটের অন্যান্য জাহাজগুলোতে কোনও ধরনের আঘাত বা ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন সামরিক বাহিনী সোমবার বলেছে, তারা লোহিত সাগর এলাকায় ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ড্রোন সিস্টেম ধ্বংস করে দিয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত দুটি ক্ষেপণাস্ত্রসহ একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে মার্কিন বাহিনী।
এছাড়া ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একটি স্থল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং লোহিত সাগরের ওপর ইয়েমেন থেকে হুথিদের নিক্ষেপ করা একটি মনুষ্যবিহীন বিমান ব্যবস্থাও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
ইয়েমেনের হুথি বাহিনী গত রোববার বলেছিল, তারা ব্রিটিশ, মার্কিন এবং ইসরায়েলি জাহাজগুলোতে রকেট এবং ড্রোন ছুঁড়েছে।
তবে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড রোববার জানায়, ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে এডেন উপসাগরের দিকে একটি জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তবে তাতে মার্কিন, জোট বা বাণিজ্যিক জাহাজের কোনও আঘাত বা ক্ষতির মুখে পড়ার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
মূলত ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে প্রায়ই হামলা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। ইরান-সমর্থিত হুথিরা লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট দিয়ে যাতায়াতকারী ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে এবং তাদের সেই হামলা অব্যাহত রয়েছে।
আর হুথিদের জাহাজে বারবার হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই ধরনের হামলা চালিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
লোহিত সাগরে হুথিদের এই হামলা বিশ্ব বাণিজ্যকে ব্যাহত করেছে এবং অনেকের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে বলে দাবি পশ্চিমাদের। মূলত হুথিরা রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন অব্যাহত থাকার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে যুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে তারা।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুথিদের হামলা লোহিত সাগরে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার জবাব দিয়েছে। এর বিপরীতে হুথিরা আমেরিকান এবং ব্রিটিশ স্বার্থকেও হামলার বৈধ লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন
এছাড়া হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র একটি বহুজাতিক নৌ টাস্কফোর্সও গঠন করেছে যার লক্ষ্য লোহিত সাগরের ট্রানজিট রুটে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা রক্ষা করা। হুথিদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যদিও হুথিদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
হুথিরা মূলত ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু জাইদি নামের উপ-সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী। বেশিরভাগ ইয়েমেনি হুথিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসবাস করে। পাশাপাশি সানা এবং ইয়েমেনের উত্তরে হুথিরা লোহিত সাগরের উপকূলরেখাও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
টিএম