আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ মোজাম্বিকে ফেরি ডুবির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া এই ঘটনায় এখনও ২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এর আগে ফেরি ডুবির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৯০ বলে জানানো হয়েছিল।

মূলত আফ্রিকার এই দেশটিতে দেখা দেওয়া কলেরার প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে নিহতরা অন্য কোথাও পালিয়ে যাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোজাম্বিকের উত্তর উপকূলে ফেরি বোট ডুবে ১০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফিলিপ ন্যুসি সোমবার জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনায় প্রায় ২০ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

আফ্রিকার এই দেশটির মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট ইনস্টিটিউটের (ইন্ট্রাসমার) একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ১৩০ জন যাত্রী বহনকারী এই নৌযানটি আসলে একটি ওভারলোডেড ফিশিং বোট ছিল এবং এতে যাত্রী পরিবহনের লাইসেন্স ছিল না।

ইন্ট্রাসমার-এর প্রশাসক লোরেঙ্কো মাচাদো রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, গত রোববার এই ফেরিটি নামপুলা প্রদেশের লুঙ্গা থেকে মোজাম্বিক দ্বীপে লোকেদের নিয়ে যাচ্ছিল। প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, জোয়ারের ঢেউয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এটি ডুবে গেছে।

নামপুলা প্রদেশের সেক্রেটারি অব স্টেটের অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, যাত্রীরা কলেরা প্রাদুর্ভাবের কারণে পালিয়ে যাচ্ছিল বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার পর ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং প্রায় ২০ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ফিলিপ ন্যুসি বলেছেন, তিনি এই ট্র্যাজেডিতে দুঃখ পেয়েছেন এবং তদন্তের জন্য আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই দেশটির পরিবহন মন্ত্রীকে দ্বীপে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার অফিস বলেছে, ‘মোজাম্বিক সরকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে আগামীকাল বৈঠক করবে এবং এই ঘটনার প্রভাব কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

রয়টার্সের হাতে আসা বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি সৈকতে অনেক লাশ পড়ে আছে এবং কিছু লোক শিশুদের লাশ বহন করছে।

উল্লেখ্য, মোজাম্বিক এবং আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য দেশ গত বছর থেকে কলেরার প্রাদুর্ভাবের সম্মুখীন হয়েছে। মোজাম্বিকের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে দেশটিতে ১৫ হাজার ৫১ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩২ জন মারা গেছেন।

আর গত রোববার পর্যন্ত, দেশটির নামপুলা প্রদেশে ৫ হাজার ৮৪ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১২ জন মারা গেছেন।

টিএম