‘‘রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উত্তরের ক্রোকাস সিটি কনসার্ট হলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) জড়িত বলে মন্তব্য করে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই হামলায় ইসলামিক স্টেট নয়, বরং ইউক্রেন জড়িত।’’ রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের মূল প্রতিষ্ঠান রোসিয়া সেগোদনিয়ার প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ান শনিবার এমন দাবি করেছেন।

রোসিয়া সেগোদনিয়া মিডিয়া গ্রুপের এই প্রধান জোর দিয়ে বলেছেন, রুশ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এই হামলাকারীদের নাম ও পরিচয় জানতে পেরেছে। সন্ত্রাসীরা জিজ্ঞাসাবাদে হামলার সব তথ্য দিয়েছে।

তিনি বলেন, হামলার পরপরই মার্কিন গণমাধ্যম এমন ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি জানাতে শুরু করে যে, এই হামলায় আইএস জড়িত। সিমোনিয়ান বলেন, অপরাধীদের হামলার চালানোর জন্য এমনভাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল যে এই হামলার পেছনে আইএসই ছিল; এমন আখ্যান পশ্চিমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝাতে সহায়তা করবে।

রাশিয়ার এই সম্পাদক বলেন, আইএসের সঙ্গে এই হামলার কোনও সম্পর্ক নেই। ইউক্রেনীয়রাই এই হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যম এমন উৎসাহ নিয়ে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে, গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই তারা আইএসকে দায়ী করেছে। কিন্তু গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে হামলার পেছনে কারা জড়িত তার সবই জানিয়েছে।

সিমোনিয়ান ‌‌বলেন, ‘‘কনসার্ট হলে হামলা আইএস করেনি। আরও অনেকের একটি সু-সমন্বিত দল এই হামলা চালিয়েছে।’’

এর আগে, শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরের ক্রাসনোগোর্স্ক অঞ্চলের ক্রোকাস সিটি হলের কনসার্ট ভেন্যুতে ভয়াবহ হামলা হয়। সন্ত্রাসীদের নির্বিচার গুলিতে কমপক্ষে ১৪৩ জনের প্রাণহানি ঘটে। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় হামলাকারীরা। গুলির পাশাপাশি সিটি হলে আগুন ধরিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।

হামলার ঘটনার পরপরই পশ্চিমা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই হামলা জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট জড়িত বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আর যুদ্ধরত ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, মর্মান্তিক এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।

পরে ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক অঞ্চল থেকে সন্দেহভাজন ১১ হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে রুশ নিরাপত্তা বাহিনী। রাশিয়ার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তের অপর প্রান্তে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে গ্রেপ্তারকৃতদের ঘাঁটি রয়েছে। সেখান থেকে প্রস্তুতি নিয়েই মস্কোর সিটি কনসার্ট হলে হামলা করেছে তারা। 

কিয়েভ হামলার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করলেও অতীতে রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার সন্ত্রাসী হামলা চালানোর রেকর্ড রয়েছে। বেলগোরোদ অঞ্চলে গোলাবর্ষণ থেকে শুরু করে রাশিয়ার রাজনৈতিক বিজ্ঞানী দারিয়া দুগিনা ও সাংবাদিক ভ্লাদলেন তাতারস্কিকে হত্যার ঘটনায় ইউক্রেনীয় গোয়েন্দারা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসএস