পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের আরব সাগর লাগোয়া গোয়াদর সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষ কমপ্লেক্সে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে সংঘর্ষে অন্তত ৮ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। বুধবার দেশটির কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরের একটি কমপ্লেক্সের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের সময় নিহত হয়েছেন তারা।

কয়েক দশক ধরে চলা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহ সত্ত্বেও পাকিস্তানের খনিজসমৃদ্ধ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে চীন। চীনা এই বিনিয়োগ পাওয়ার তালিকায় রয়েছে দেশটির কৌশলগত গোয়াদর বন্দরও।

বেলুচিস্তানের সরকারি কমিশনার সাঈদ আহমেদ উমরানি বলেছেন, অস্ত্র ও বোমায় সজ্জিত সন্ত্রাসীরা বন্দরের বাইরের একটি কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছে। সেখানে সরকারি দপ্তর, গোয়েন্দা সংস্থা এবং আধাসামরিক বাহিনীর কার্যালয় রয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কমপ্লেক্সে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি বলেছেন, বন্দরে হামলাকারী অন্তত ৮ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তিনি বলেন, আমাদের বার্তা একেবারে পরিষ্কার। যারা সহিংসতার পথ বেছে নেবে, তাদের প্রতি কোনও ধরনের দয়া দেখানো হবে না।

উমরানি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের সাথে সংঘর্ষে সামরিক বাহিনীর কমপক্ষে এক সদস্য নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি।

বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী কয়েকটি গোষ্ঠীর মধ্যে সবেচেয়ে আলোচিত দ্য বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এক বিবৃতিতে গোয়াদর বন্দরে হামলার দায় স্বীকার করেছে  বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে আন্দোলন করে আসা সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, বিএলএর সদস্যরা গোয়াদর বন্দরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন।

বেলুচিস্তানসহ পাকিস্তানের অন্যান্য অঞ্চলেও পাকিস্তানি ও চীনা নাগরিকদের ওপর এর আগেও হামলা চালিয়েছিল বিএলএ। চীনের অর্থায়নে পাকিস্তানে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি) নামে যে ৬৫০ কোটি ডলারের বিশাল প্রকল্পের কাজ চলছে, তার একটি অংশ গোয়াদর সমুদ্র বন্দর। চীনের ভবন ও সড়ক নির্মাণকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এই প্রকল্পটির কাজ তদারকি করছে।

সিপিইসি প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হলে গোয়াদর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের অবকাঠামোগত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজও করছে বিআরআই।

সূত্র: রয়টার্স, ডন।

এসএস