লোহিত সাগরে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলপিজি) এলপিজি বহনকারী যুক্তরাষ্ট্রের একটি ট্যাংকারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিরা। একই সঙ্গে ইসরায়েলের ইলাত অঞ্চলকেও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। মঙ্গলবার ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, নৌবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে লোহিত সাগরে মাদো নামের একটি ট্যাংকারে হামলা চালানো হয়েছে। একই দিনে ইসরায়েলের দক্ষিণের ইলাত অঞ্চলেও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।

সামুদ্রিক যান চলাচলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও অবস্থান শনাক্তকারী সংস্থাগুলো বলছে, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী মাদো নামের ওই ট্যাংকারটি সৌদি আরব থেকে সিঙ্গাপুরের দিকে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হয়েছে।

তবে ট্যাংকারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বলে দাবি করেছে হুথিরা।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিবাদে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে পশ্চিমা বিভিন্ন জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে হুথিরা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের বাব আল মান্দাব এলাকায় চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে গোষ্ঠীটি। প্রথম পর্যায়ে কেবল ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জাহাজগুলোতেই আক্রমণ চালানো হচ্ছিল।

কিন্তু ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের যৌথ বাহিনী হুথিদের লক্ষ্য করে বিমান অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের পাশাপাশি এই দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতেও হামলা শুরু করে হুথিরা।

তিন মাসের বেশি সময় ধরে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে হুথিদের হামলার শিকার হয়েছে বেশ কিছু বাণিজ্যিক ও ট্যাংকার জাহাজ। এসব জাহাজের কয়েকটি সাগরে ডুবেও গেছে। ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে হুথিরা। এই গোষ্ঠীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুলসালাম বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ বিরতি হলে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হামলা বন্ধ করবেন তারা।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যায়। নজিরবিহীন সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৩১  হাজারেরও বেশি মানুষ, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা।

এসএস