বিদ্যুৎ-খাদ্যের তীব্র সংকট ঘিরে কিউবায় বিক্ষোভ
কিউবার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সান্তিয়াগোতে শত শত মানুষ বিরল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। খাদ্য এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ সংকটের কারণে রোববার এই বিক্ষোভ হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে জানা গেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে’’ সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশটির বিভিন্ন শহরে খাদ্য ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক এলাকায় দিনে ১৮ ঘণ্টা কিংবা তারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ মিলছে না। এর ফলে হিমায়িত খাবার নষ্ট ও মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। এই সংকটের অবসান জানিয়ে শত শত মানুষ দ্বীপ দেশটিতে বিক্ষোভ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও অনুযায়ী, সান্তিয়াগোর বাসিন্দারা খাদ্য এবং বিদ্যুতের দাবিতে স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
গত কয়েক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব আর অর্থনৈতিক কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে এক কোটি ১০ লাখ মানুষের এই দেশটি বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৯০ এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে এমন কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে পড়েনি দেশটি।
কিউবার সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশটির অর্থনীতি দুই শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ওই বছর দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ৩০ শতাংশে পৌঁছায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা সম্ভবত বাস্তবতার চেয়ে কম।
কমিউনিস্ট শাসিত এই দ্বীপ রাষ্ট্র নগদ অর্থ সংকটে ধুঁকছে। এর মাঝেই দেশটির সরকার বাজেট ঘাটতি কাটানোর জন্য কয়েকটি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বালানির নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। পরে দেশটির সরকার জ্বালানির দাম পাঁচগুণ বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়।
খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ভয়াবহ সংকটের কারণে নজিরবিহীন সংখ্যায় দেশ ছাড়ছেন কিউবার নাগরিকরা। গত কয়েক মাসে ৪ লাখের বেশি কিউবান যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে দেশটির সরকারি এক পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে।
দিয়াজ-ক্যানেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় সান্তিয়াগোতে বিক্ষোভের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিক্ষোভ-সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই এক্সে তিনি বলেন, ‘‘কিছু মানুষ বৈদ্যুতিক পরিষেবা এবং খাদ্য বিতরণ পরিস্থিতি নিয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমাদের দল, রাষ্ট্র এবং সরকারের কর্তৃপক্ষের নীতি হলো জনগণের অভিযোগের বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া, তাদের কথা শোনা, সংলাপে বসা এবং পরিস্থিতির উন্নতির জন্য যে প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করা। আর এসবই করতে হবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে।’’
এসএস