হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী হুথি। বৃহস্পতিবার হুথি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই সূত্র বলেছে, হুথি গোষ্ঠীর ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৮০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছাতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র সলিড-জ্বালানিচালিত।

ইরান-সমর্থিত হুথিরা লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর এবং আরব সাগরের পাশাপাশি ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য ক্ষেপণাস্ত্রটি ব্যবহার করতে চায় বলে জানিয়েছে ওই সামরিক সূত্র। দূরপাল্লার এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হুথি গোষ্ঠী নিজেরাই উৎপাদন করবে বলে জানিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিবাদে গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে পশ্চিমা বিভিন্ন জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে হুথিরা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের বাব আল মান্দাব এলাকায় চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে গোষ্ঠীটি। প্রথম পর্যায়ে কেবল ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জাহাজগুলোতেই আক্রমণ চালানো হচ্ছিল।

কিন্তু ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের যৌথ বাহিনী হুথিদের লক্ষ্য করে বিমান অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের পাশাপাশি এই দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতেও হামলা চালানো শুরু করে হুথিরা।

গত তিন মাসে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে হুথিদের হামলার শিকার হয়েছে বেশ কিছু বাণিজ্যিক ও ট্যাংকার জাহাজ। এসব জাহাজের কয়েকটি সাগরে ডুবেও গেছে। ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে হুথিরা। এই গোষ্ঠীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুলসালাম বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ বিরতি হলে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হামলা বন্ধ করবেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যায়। নজিরবিহীন সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৩১  হাজারেরও বেশি মানুষ, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

সূত্র: আলজাজিরা, আরআইএ নভোস্তি।

এসএস