জার্মান বিমানবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গোপন কথোপকথন ফাঁস করে রাশিয়া আসলে পশ্চিমা ঐক্যে চিড় ধরাতে চাইছে বলে মনে করছে মার্কিন প্রশাসন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, মস্কো বিভাজন ঘটাতে সাহসী ও স্বচ্ছ এই প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তাছাড়া ইউক্রেনের জন্য সহায়তার ক্ষেত্রে জার্মান সরকারের মধ্যেই ঐক্যের অভাব রয়েছে বলে মস্কো প্রতিপন্ন করতে চাইছে।

তিনি বলেন, একাধিক দেশ নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী ইউক্রেনে সহায়তা করছে। এক্ষেত্রে জার্মানির সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসাও করেছেন কিরবি। এর আগে জার্মানি রাশিয়ার এই আচরণকে ‘তথ্য যুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস আরো একবার ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে নিজের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সেই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু স্থির করতে প্রোগ্রামিংয়ের জন্য জার্মান সৈন্যদের সহায়তার প্রয়োজন হবে বলে তিনি দাবি করেছেন। শলৎস বলেন, চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি এভাবে জার্মানিকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে দিতে পারেন না।

ইউক্রেনকে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে ব্রিটেন ও ফ্রান্স নিজস্ব সৈন্যদের প্রোগ্রামিংয়ের কাজে লাগাচ্ছে বলেও শলৎস আগে ইঙ্গিত করেছিলেন। ফলে বিষয়টি কেন্দ্র করে ইউরোপীয় স্তরে অস্বস্তি সৃষ্টি হচ্ছে। বিরোধীপক্ষ ও অনেক বিশেষজ্ঞদের দাবি, শলৎসের এমন সব দাবি মোটেই পুরোপুরি সত্য নয়। উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইউক্রেনীয় সৈন্যরাই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে সক্ষম। তবে সেক্ষেত্রে এমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করতে আরো সময় লাগবে বলে তারা মনে করছেন।

শলৎসের বক্তব্য সত্ত্বেও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে জার্মানির সক্রিয় ভূমিকার অভিযোগ করছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ বিযয়ে কৈফিয়ৎ চেয়েছে মস্কো। রাশিয়ার ভূখণ্ডের ওপর হামলার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে বলে ক্রেমলিনের নেতারা অভিযোগ করছেন। অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সংযোগকারী সেতু ধ্বংস করতে জার্মানি ইউক্রেনের সহায়তা করতে চাইছে, রুশ নেতাদের মন্তব্যে এমন মারাত্মক দাবি উঠে আসছে। জার্মানি তথা পশ্চিমা বিশ্বের ওপর পাল্টা হামলারও হমকি দিচ্ছেন তারা।

গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে জার্মানির রাজনীতিতে জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সম্ভবত আগামী সোমবারই সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগে প্রতিরক্ষা বিষয়ক কমিটি জরুরি বৈঠকে বসছে। সেখানে চ্যান্সেলর শলৎসও বক্তব্য রাখবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তার আগে সেনাবাহিনীর তথ্য ফাঁস সম্পর্কে তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হবে বলে রাজনৈতিক নেতারা আশা করছেন। ভবিষ্যতে জার্মান সেনাবাহিনীর যোগাযোগ আরো সুরক্ষিত করার বিষয়েও অগ্রগতির আশা জাগছে।

এসএস