রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলা হয়ে থাকে সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভকে (ফাইল ছবি)

ইউক্রেনকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। একইসঙ্গে ইউক্রেনের বর্তমান নেতৃত্বের সাথে যেকোনও ধরনের শান্তি আলোচনাও প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

এমনকি রাশিয়ার ঐতিহাসিক অংশগুলোর ‘ঘরে ফেরা’ উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন মেদভেদেভ। সোমবার (৪ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের পর দীর্ঘসময় ধরে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্বপালন করেছেন দিমিত্রি মেদভেদেভ। বর্তমানে তিনি রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান।

বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষস্থানীয় এই মিত্র যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেন নিয়ে বেশ আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে এসেছেন।

আল জাজিরা বলছে, সোমবার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সোচিতে এক যুব উৎসবে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইউক্রেনকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেন মেদভেদেভ। তিনি বলেন, অপর পক্ষ (ইউক্রেন) আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত রাশিয়া তার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ অব্যাহত রাখবে।

সাবেক এই রুশ প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রাশিয়ার ঐতিহাসিক অংশগুলোকে ‘স্বদেশে ফিরিয়ে আনা’ উচিত।

মেদভেদেভ এদিন ইউক্রেনের একটি মানচিত্রকে সামনে রেখে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের সাবেক এক নেতা কোনও এক সময়ে বলেছিলেন- ইউক্রেন রাশিয়ার অংশ নয়। এই ধারণাটি চিরতরে মিটিয়ে দেওয়া দরকার। ইউক্রেন অবশ্যই রাশিয়ার অংশ।

এসময় তিনি দর্শকদের কাছ থেকে করতালিতে মুখরিত হন। মেদভেদেভ বলেন, ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বে শান্তি আলোচনা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ কোনও ইউক্রেনীয় সরকার আলোচনা করতে চাইলে তাদের আগে নতুন বাস্তবতা মেনে নেওয়ার স্বীকৃতি দিতে হবে।

পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে মেদভেদেভ বলেন, মস্কো এবং ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের চেয়েও খারাপ অবস্থায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলা হয়ে থাকে দিমিত্রি মেদভেদেভকে। ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মেদভেদেভ রাশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এছাড়া ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে ভয়াবহ এক সংঘাত এবং ১৯৬২ সালের কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর মস্কো ও পশ্চিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছে।

টিএম