ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলের প্রশাসনিক রাজধানী রামাল্লায় এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় আকারের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী। রোববারের রাতব্যাপী সেই অভিযানে মুস্তফা আবু শালবাক নামের এক ১৬ বছর বয়সী কিশোর নিহতও হয়েছে।

প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোববার রাতজুড়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর কয়েক ডজন সাঁজোয় যান পুরো রামাল্লায় টহল দিয়েছে। আম’আরি শরণার্থী শিবিরের কাছাকাছি এলাকায় একটি সাঁজোয়া যান আসার পর সেখান থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি শিবির লক্ষ্য করে চালানো হয়। সে সময় নিহত হয় মুস্তফা।

তার ঘাড় এবং বুকে গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম তীরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

বস্তুত, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরেও সংহিসতা শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি বসতকারী, সেনা ও পুলিশের হামলায় গত ৫ মাসে রামাল্লাসহ পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০০ জন ফিলিস্তিনি।

এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে রোববার রাতের অভিযানটি ছিল রামাল্লায় ইসরায়েলি বাহিনীর সবচেয়ে বড় অভিযান।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।

রোববার রাতে রামাল্লার পাশাপাশি পশ্চিম তীরের তুলকার্ম এবং নাবলুসেই ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াফা।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ