ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে আরও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে গাজার লাখ লাখ মানুষ। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা গাজার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে না।

বুধবার ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি ওয়ার্ল্ড জায়নিস্ট অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউজেডও) জরুরি সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি সত্ত্বেও তিনি বলেছেন, ‘‘ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, গাজার জনগণের বিরুদ্ধে নয়।’’

ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ‘‘এই যুদ্ধে আমাদের লক্ষ্য, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল জিম্মিদের উদ্ধার করা। একই সঙ্গে গাজার নাগরিকদের হামাসের হাত থেকে মুক্তি নিশ্চিত করাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা উত্তর থেকে দক্ষিণে হামাসের সামরিক কাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছি। আমরা ইতিমধ্যে হামাসের ২৪টির মধ্যে অন্তত ১৮টি ব্যাটালিয়ন ধ্বংস করেছি। বাকিগুলো ধ্বংস করার কাজ চলছে। এর মধ্যে অন্তত চারটি ব্যাটালিয়ন রাফাহতে রয়েছে।’’

হ্যাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহর ১৪ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারে না। একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য সেখানকার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় অন্তত এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। ওই দিন ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনের বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীর হামলার জবাবে গাজা উপত্যকায় নৃশংস অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো নৃশংসতায় গাজায় প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন পবিত্র রমজানের আগে হামাস-ইসরায়েলের মাঝে নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও হামাস এখনও আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পায়নি বলে গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানিয়েছেন।

এসএস