ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন (ফাইল ছবি)

পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়া ও চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন। আর এর মাধ্যমে নিরাপত্তার সাথে আপস করা হয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।

ইউরোপের এই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দাবি, রাশিয়া ও চীনের ওপর পশ্চিমাদের নির্ভর করা উচিত নয়। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব নির্বোধভাবে রাশিয়া এবং চীনের মতো দেশের ওপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে নিরাপত্তার সাথে আপস করেছে।

ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খুব সাদাসিধা কাজ করেছি এবং বিশ্বের পশ্চিম অংশে আমরা ধনী হওয়ার দিকে খুব বেশি মনোযোগ দিয়েছি। এতে করে আমরা এমন দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছি যাদের ওপর আমাদের নির্ভর করা উচিত নয়। যেমন রাশিয়া থেকে গ্যাস এবং চীন থেকে নতুন প্রযুক্তি নিয়েছে পশ্চিমারা।’

ফ্রেডরিকসেন বলেন, এই সময়টাতে পশ্চিমা সরকারগুলোকে নিরাপত্তার বিষয়ে জনগণের সাথে আলোচনা করতে হবে। কারণ ‘সাধারণভাবে আমরা গত ৩০ বছরে আমাদের স্বাধীনতার মূল্য দিতে পারিনি’।

তিনি বলেন, ‘আরও আক্রমণাত্মক রাশিয়াকে’ মোকাবিলা করতে ইউরোপকে অবশ্যই কল্যাণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাখাতে তহবিল বাড়াতে হবে। ইউরোপীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের স্বীকার করতে হবে, আমরা আমাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট অর্থ ব্যবহার করিনি।

ত্যাগের বিনিময়েই স্বাধীনতা আসে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডেনমার্কের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সম্প্রসারণবাদী পররাষ্ট্রনীতি শুধু প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। (ইউক্রেনে) পূর্ণ-মাত্রায় আক্রমণের দুই বছর পরে আপনি কেবল একজন ব্যক্তির কথা বলতে পারবেন না। দেশের কথা বলতে হবে। আমি শুধু ইউক্রেনেই নয়, সব দিক থেকে আরও আগ্রাসী রাশিয়া দেখতে পাচ্ছি। আমি মনে করি, আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে: এটি কি রাশিয়ার জন্য চূড়ান্ত গন্তব্য? নাকি বৃহত্তর রাশিয়া গড়ে তোলার জন্য তারা (রাশিয়া) যা অর্জন করতে চায় এটি কেবল তারই একটি অংশ?

তিনি সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার আগামী বছরগুলোতে কোনও একটি ন্যাটো দেশকে আক্রমণ বা চ্যালেঞ্জ করার সম্ভাবনা রয়েছে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ন্যাটোর অধীনে যথাযথ প্রতিরোধ এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।

ফ্রেডরিকসেন বলেন, ‘তারা এখন রাশিয়ায় একটি যুদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তুলছে এবং কয়েক বছরের মধ্যে তারা একটি ন্যাটো দেশকে আক্রমণ করতে বা চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম হবে যদি আমরা প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা করতে না পারি এবং যদি আমরা ন্যাটোতে ঐক্যবদ্ধ না হই।’

তিনি বলেন, ‘সামনের বছরগুলোতে আমাদের যা করতে হবে, সেটিই মূলত নিশ্চিত করবে যে- এমন কিছু ঘটবে না।’

টিএম