ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালিতে তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতাকে ধাওয়া দিয়েছেন স্থানীয় নারীরা। পরে সন্দেশখালির তৃণমূলের বেড়মজুর ১ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি অজিত মাইতি নামের ওই নেতা এক বৃদ্ধের বাড়িতে ঢুকে পড়ে কোনও রকমে প্রাণ রক্ষা করেছেন। সেই বাড়ি ঘিরে ফেলে তার গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সেখানকার নারীরা। প্রায় ঘণ্টাখানেকের টানাপোড়েনের পর অজিত মাইতিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী সুজিত বসু ও পার্থ ভৌমিকের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন অজিত মাইতি। সেখান থেকে ফেরার পথে তাকে তাড়া করেন গ্রামের নারীরা। প্রাণ বাঁচাতে একটি বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েন তিনি। বাড়ির মালিক এক বৃদ্ধ। তিনি তখন গোসল করতে স্থানীয় পুকুরে গিয়েছিলেন। তখনই বাড়িতে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন অজিত মাইতি। এ সময় তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বাইরে বিক্ষোভ করেন নারীরা।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, এই ঘটনা জানার পর বাড়ির মালিক ফিরে আসেন। ভেজা গায়ে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁপছিলেন তিনি। কিন্তু অজিত মাইতি দরজা খুলতে নারাজ। গেটের ভেতর থেকেই গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা যাবেন না। যা হওয়ার আপনাদের সামনেই হোক।’’

তিনি বলেন, লোকজন আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করছে। আমি যে তার জবাব দেব তার আগেই ওরা পিটিয়ে মেরে ফেলবে। আমাকে ২০১৯ সালে মারধর করে সিরাজ ডাক্তারের লোকজন তৃণমূলে যোগদান করতে বাধ্য করেছিল। তার আগে আমি বিজেপি করতাম। কিন্তু ওদের জমি দখলের ব্যাপারটা আমি জানতাম না। শেখ শাহজাহান, সিরাজদের সঙ্গে থেকে আমিও পচা আলু হয়ে গিয়েছি। আমি দলের পথে থাকতে চাই না। আমি আজই পদত্যাগ করব।

এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। স্থানীয়দের বুঝিয়ে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করতে থাকে তারা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। উল্টো বিক্ষোভ আরও বাড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বসিরহাটের এসপি মেহেদি হাসান। তারাও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। কিন্তু অজিতকে গ্রেপ্তার না করলে তারা সরবেন না বলে জানিয়ে দেন গ্রামবাসীরা।

গ্রামবাসীদের দাবি, তাদের অমানবিক নির্যাতন করেছেন অজিত মাইতি। জমি দখল, বাড়ি ভাঙচুর, মারধর করেছেন তিনি। পুলিশকে জানালে শেখ শাহজাহান ও সিরাজের সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে নিতে বলা হতো তাদের।

এসএস