এডেন উপসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাবাহী ও মালিকানাধীন তেল ট্যাংকার এমভি টর্ম থরে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। রোববার ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া মার্কিন তেল ট্যাংকারে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার জবাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে হুথি বিদ্রোহীরা। প্রথম দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে হামলা চালালেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক জাহাজেও হামলা চালাচ্ছে এই গোষ্ঠীটি।

রোববারের হামলার বিষয়ে টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তৃতায় ইয়াহিয়া সারিয়া বলেছেন, হুথি সদস্যরা বেশ কয়েকটি নৌ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে তেলবাহী মার্কিন ট্যাংকার এমভি টর্ম থরে হামলা চালিয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী রণতরী মার্কিন ইউএসএস ম্যাসন শনিবার ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে এডেন উপসাগরে উৎক্ষেপণ করা একটি জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। সম্ভবত ট্যাংকারটিকে লক্ষ্য করে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল।

তবে হামলায় ইউএসএস ম্যাসন বা এমভি টর্ম থরের কোনোটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং কেউই আহত হননি বলে সেন্টকমের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে গত ১৯ নভেম্বর থেকে এডেন উপসাগর ও লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হুথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনের সর্বাধিক জনবহুল এলাকার নিয়ন্ত্রণকারী এই গোষ্ঠীর অনবরত হামলায় বৈশ্বিক পণ্য পরিবহনের অন্যতম প্রধান এই জলপথে ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে।

হুথিদের একের পর এক জাহাজে হামলার জবাবে মার্কিন ও ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী প্রায়ই হুথিদের অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে। শনিবারও ইয়েমেনের সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। হুথিদের অন্তত ১৮টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে দেশ দুটি।

পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে হুথিরা এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিক ও নৌ জাহাজে ৪৫টিরও বেশি আক্রমণ করেছে; যা বিশ্ব অর্থনীতি, সেইসাথে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং এই কারণে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া থাকা উচিত।’’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস এবং নিউজিল্যান্ডের সমর্থনে এই হামলা চালানো হয়েছে।’’

বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হুথিদের এসব হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক প্রভাব পড়েছে। লোহিত সাগর থেকে মিসরের সুয়েজ খাল হয়ে যেসব জাহাজ ইউরোপে যেত; সেসব জাহাজকে এখন আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস