মিয়ানমারের মান্দালায়ের পাসপোর্ট অফিসে পদদলিত হয়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের ঠেকাতে দুই সপ্তাহ আগে মিয়ানমারে সব নাগরিকের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দেয় সামরিক জান্তা।

সেনাবাহিনীতে যোগদান থেকে বাঁচতে এরপর দেশটির মানুষের মধ্যে দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায়। যাদের পাসপোর্ট নেই; তারা পাসপোর্ট অফিসে ভীড় করা শুরু করেন। এমনই সোমবার মান্দালায়ে পাসপোর্ট অফিসে ঢোকার জন্য লাইন ধরেন হাজার হাজার মানুষ। সেখানেই পদদলনের ঘটনা ঘটে।

ইয়াঙ্গুনের এক ভিসা ও পাসপোর্ট এজেন্ট সংবাদমাধ্যম ইরাবতিকে জানিয়েছেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সামরিক জান্তার এমন ঘোষণার পর বিপুল সংখ্যক মানুষ পাসপোর্ট তৈরির জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন।

মান্দালায়ের এক বাসিন্দা— যিনি পাসপোর্ট অফিসের কাছেই থাকেন— তিনি বলেছেন, “প্রতিদিন পাঁচ হাজার মানুষ পাসপোর্টের জন্য লাইন ধরছেন। কিন্তু দিনে মাত্র ২০০টি আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে।”

জান্তা বাহিনীর এমন ঘোষণার আগে পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি।

অপর এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, পাসপোর্ট অফিসে লাইন ধরার জন্য ছোট একটি জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেখানে অনেক মানুষ ভীড় করেন। এরপর ঠেলাঠেলিতে পড়ে গিয়ে দুই নারী পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান। সোমবার রাত ২টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় একটি দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে, মানুষের চাপাচাপিতে শ্বাস বন্ধ হয়ে তিন নারী জ্ঞান হারান। এরপর তাদের দ্রুত একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যার মধ্যে দুই নারীর মৃত্যু হয়।

নিহত দুজনের মধ্যে একজনের বয়স ৫২; আরেকজনের বয়স ৩৯। আহত অপর নারীর বয়স ৫৩ বছর। তিনি হাসপাতালে এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মান্দালায়ের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুনে প্রতিদিন ২ হাজার ৫০০ এবং মান্দালায়ে ২০০টি আবেদন নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষ পাসপোর্টের আবেদন ফরম পেতে মধ্যরাত থেকে ভীড় করছেন।

এছাড়া সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কিছু অসাধু ব্যক্তিও পাসপোর্ট অফিসে লাইনে দাঁড়াতে ভীড় করছেন। তারা আগে থেকে অপেক্ষা করে লাইনে দাঁড়ান; এরপর সেই স্থানটি অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেন। শুধুমাত্র এই স্থান কেনার জন্য কেউ কেউ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ কিয়াট (মিয়ানমারের মুদ্রা) খরচ করছেন।

সূত্র: ইরাবতি

এমটিআই