পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন বুশরা বিবির ছোট বোন মরিয়ম রিয়াজ ওয়াত্তু।

ওয়াত্তুর অভিযোগ, গৃহবন্দি বুশরা বিবির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কোনো চিকিৎসককে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সেই সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবারে বিষাক্ত কিছু ছিলো বলেও সন্দেহ করছেন তিনি।

আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের সঙ্গে বুশরা বিবিও ১৪ বছর করাবাসের সাজা পেয়েছেন। রাজধানী ইসলামাবাদের আবাসিক এলাকা বানি গালায় নিজেদের বাসভবনে গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন তিনি।

মরিয়ম রিয়াজ ওয়াত্তু বর্তমানে দুবাইয়ে শিক্ষাবিদ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় তিনি জানান, কয়েক দিন আগে বুশরার প্রথম পক্ষের মেয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। 

‘সে (বুশরার মেয়ে) আমাকে জানিয়েছে যে, ৬ দিন আগে কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবার খাওয়ার পর গলা এবং পাকস্থলিতে ব্যাপক জ্বালাপোড়া অনুভব করছেন বুশরা। তারপর থেকে কিছুই খেতে পারছেন না তিনি; ফলে শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’

‘আমার বোনের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। যখন (তোশাখানা মামলায়) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তার শারীরিক অবস্থা খুবই ভালো ছিল; কিন্তু অসুস্থ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কোনো চিকিৎসক ডাকেনি আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষ।’

‘আমার বোন এবং আমরা ভয় পাচ্ছি যে, এভাবে ধীরে ধীরে তাকে অসুস্থ করা হবে এবং পরে এক সময় ঘোষণা করা হবে যে শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক অবসাদে ভুগে তিনি মারা গেছেন; কিন্তু তিনি আমাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন যে তার বিশ্বাস এখনও দৃঢ় রয়েছে, আলহামদুল্লিাহ এবং আমাদের জাতির মুক্তির জন্য তিনি সব সহ্য করতে রাজি আছেন।’

‘আমাদের দাবি, অবিলম্বে বুশরা ইমরান খানের স্বাস্থ্যের মেডিকেল পরীক্ষা করানো হোক এবং আমাদের পছন্দ অনুযায়ী কোনো একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক। কারা কর্তৃপক্ষের মনোনীত ডাক্তররা যদি এক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে থাকেন, আমাদের আপত্তি নেই। আমি এ ইস্যুতে পাকিস্তানের বিচার বিভাগের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

ইমরান খানের তৃতীয় স্ত্রী বুশরা বিবির জন্ম ১৯৪৯ সালে, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ওয়াত্তু পরিবারে। এই পরিবারটি পাঞ্জাবের অন্যতম জমিদার পরিবার।

১৯৮৯ সালে কাস্টমস কর্মকর্তা খাওয়ার ফরিদ মানেকার সঙ্গে বিয়ে হয় বুশরার। এই দম্পতির ঘরে তিন মেয়ে এবং দুই ছেলে রয়েছে।

২০১৮ সালে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে মানেকা-বুশরা দম্পতির। তারপর ওই বছরই ইমরান খানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

খাওয়ার ফরিদ মানেকার পরিবারের সদস্যরা পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তবে মানেকা-বুশরা দম্পতির মেজো মেয়ে মেহেরু মানেকা পিটিআইয়ের একজন সক্রিয় কর্মী। ধারণা করা হচ্ছে, দুবাইয়ে তিনিই মরিয়ম রিয়াজ ওয়াত্তুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

সূত্র : জিও নিউজ

এসএমডব্লিউ