ভারত সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখার আশেপাশের অঞ্চলে ক্রমাগত বসতি গড়ে তুলছে চীন। গত তিন-চার বছরে অরুণাচল প্রদেশ সংলগ্ন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলএসির ওপারে অনেক গ্রাম তৈরি করেছে দেশটি। আর গ্রামগুলো সাধারণ নাগরিক না কি সেনাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত।  

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশের পর উত্তরাখণ্ডেও সীমান্ত বরাবর বসতি স্থাপন করেছে চীন। উত্তরাখণ্ড সীমান্তের কাছে গ্রাম তৈরি করছে দেশটি। এই গ্রামগুলো সীমান্তের খুব কাছে। ভারতীয় সীমান্ত থেকে দূরত্ব মাত্র ১১ কিলোমিটার। ভবিষ্যতেও এই ধরনের নির্মাণের পরিকল্পনা করছে চীন। এর আগে, লাদাখ ও অরুণাচলের কাছেও নির্মাণ শুরু করেছিল চীন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ডের সীমান্তের কাছে প্রায় ৫৫-৫৬টি বসতি গড়ে তুলেছে চীন। এই সমস্ত গ্রাম পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) নজরদারিতে রয়েছে। এছাড়া, সীমান্ত থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে গ্রামও গড়ে উঠতে শুরু করেছে। চীন সীমান্ত সংলগ্ন পূর্ব সেক্টরে ৪০০টি বসতি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে সীমান্তে নিজেদের উপস্থিতি আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে দেশটি।

উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে চীনের সীমান্ত প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের তৈরি এই গ্রামগুলোতে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। চীন এ পর্যন্ত এলএসির অপর পাশে ৭০০টিরও বেশি সীমান্ত বসতি স্থাপন করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর উদ্বেগ হলো, চীন এই গ্রামগুলোকে দুইভাবে ব্যবহার করতে পারে। অর্থাৎ সামরিক ও অসামরিক কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে চীনের।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দাবি করেছে, ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত জুড়ে বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করতে শুরু করেছে চীন। এই বিষয়ে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, চীনারা গত কয়েক মাসে, লোহিত উপত্যকা এবং অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টর থেকে এলএসির পাশে নির্মিত কয়েকটি গ্রাম দখল করতে শুরু করেছে। গ্রামগুলো সেনাবাহিনীর জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ গ্রামের বাসিন্দারা সাধারণ নাগরিক না কি সামরিক বাহিনীর সদস্য তা স্পষ্ট নয়। 

এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এই গ্রামগুলোতে নির্মিত দ্বিতল, বড় এবং প্রশস্ত ভবনগুলো খালি ছিল। গত কয়েক মাস ধরে সেগুলোতে চীনা নাগরিকরা থাকতে শুরু করেছেন। চীন উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী এলএসি বরাবর অবৈধ নির্মাণ করছে। তারা তাতেই থামছে না। এমনকি অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং উপত্যকার মতো অন্যান্য অঞ্চলেও দ্রুত এই ধরনের বসতি গড়ে উঠছে।

ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রামের অধীনে, ভারত প্রথম ধাপে ৬৬৩টি সীমান্তবর্তী গ্রামকে আধুনিক গ্রামে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে, লাদাখ, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশে চীন সীমান্তে এমন অন্তত ১৭টি গ্রামকে এই প্রোগ্রামের অধীনে একটি ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

কেএ